সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষনীয় মসজিদের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। এখানকার প্রতিটি মসজিদ নয়নাভিরাম, অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা। আধুনিক নির্মানশৈলী ও প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিটি মসজিদের সৌন্দর্যে মন ভরে যায় সবার।
আবুধাবির মসজিদগুলোর মধ্যে প্রথমেই আসে শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদের নাম। বৈচিত্র্যময় স্থাপত্যের কলাকৌশল এবং উপকরণ বৈচিত্র্যে ভরপুর শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ। ১৯৯৬ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।শেষ হয় ২০০৭ সালের ২০ ডিসেম্বর। ১০৭ মিটার উঁচু এই মসজিদে চারটি মিনার রয়েছে।মসজিদটির নামকরণ করা হয় আমিরাতের জনক শেখ জায়েদ বিন আল নাহিয়ানের নামে।
ক্যালিগ্রাফি, সোনার হরফে লেখা কোরআনের বাণীতে ঘেরা মসজিদটিতে রয়েছে সাতটি বিশাল আকারের ঝাড়বাতি। ১৫ মিটার উঁচু ও ১০ মিটার প্রস্থের অনিন্দ্যসুন্দর ঝাড়বাতিগুলো বানিয়েছেন জার্মানির বিখ্যাত স্ফটিক নির্মাতা ‘ফাউস্টিশ’। একেকটি ঝাড়বাতির ওজন প্রায় ৮ থেকে ১২ মেট্রিক টন। এটি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে তুরস্কের টাইলস, নিউজিল্যান্ডের উল এবং জার্মানির স্ফটিক।
ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতের স্থপতিদের মিলিত প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছে সুদৃশ্য মসজিদটি। এর কেন্দ্রীয় চত্বরের নকশা তৈরি হয়েছে মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসান মসজিদ এবং পাকিস্তানের বাদশাহী মসজিদের শৈলীর অনুকরণে।
ছোট-বড় ৭ আকারের ৮২টি গম্বুজবিশিষ্ট শ্বেত মার্বেলে নির্মিত মসজিদটিতে আছে কারুকার্য খচিত খিলান দেয়া পথ। মসজিদের হলঘর পেরিয়েই সামনে প্রধান নামাজঘর। এর দু’পাশে আরো দু’টি নামাজঘর। বিশাল উঠান এবং জলাধার ঘিরে রাখা সব থাম ও খিলানের মনোহর চত্বরে প্রায় ৪১ হাজার মুসল্লি একসংগে নামাজ আদায় করতে পারেন। মহিলাদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা।
অসাধারণ সব কারুকার্যখচিত, প্রায় ছাদ পর্যন্ত উঁচু খিলান-গম্বুজে সাজানো বিশালাকার নামাজঘরে প্রবেশ করলে যে কেউ বিস্মিত হবেন, এর শৈল্পিক সৌন্দর্য দেখে। মূল মসজিদের ভেতরে মোট ৯৬টি পিলার রয়েছে; যা মেসিডোনিয়ার মর্মর পাথরে মোড়ানো মণি-মুক্তো দিয়ে সাজানো। বিখ্যাত ইরানি গালিচা নকশাকারদের দিয়ে বানানো ৫৬২৭ বর্গমিটারের পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হাতে-বোনা গালিচাটি রয়েছে শেখ জায়েদ মসজিদের প্রধান নামাজঘরে। ১৭০০০ বর্গমিটারের আঙ্গিনা মার্বেল মোজাইকে আবৃত।যা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ চওড়া মার্বেল মোজাইক বলে স্বীকৃত।
এই মসজিদে প্রতিবছর রমজানে গণ ইফতারের আয়োজন করা হয়। যেখানে শামিল হন প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ থেকে ত্রিশ হাজারের বেশি মুসল্লি।মসজিদটির আরেকটি বিশেষত্ব, এটি সব ধর্মের মানুষের জন্যই উন্মুক্ত। প্রতিবছর বিভিন্ন ধর্মের হাজারো দর্শনার্থী আসেন এই মসজিদে।