সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বিশ্ব সাহিত্য এবং সংগীতের এক বিস্ময়কর প্রতিভা। কখনো তিনি প্রেমিক, কখনো বিদ্রোহী আবার কখনো বাউণ্ডুলে। সাহিত্য ও সংগীতে এমনই তাঁর প্রকাশভঙ্গী।
নজরুল সাধারণ মানুষের কাছে চিরকালের প্রাণের স্পন্দন। তাঁর সৃষ্টিকর্ম নিয়ে যুগযুগ ধরে গবেষণা চলছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছে গেছে নজরুলের গল্প, কবিতা, গান। যেমনটি নজরুল বলেছিলেন, ‘আমি এই দেশে, এই সমাজে জন্মেছি বলে, শুধু এই দেশেরই, এই সমাজেরই নই; আমি সকল দেশের, সকল মানুষের’
ব্রিটিশ তাত্ত্বিক উইলিয়াম ল্যাংলি বলেছিলেন, ‘কবি নজরুল ইসলাম বিগত শতকের সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক।’
সম্প্রতি তুরস্কের ফাতিহ বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুল গবেষণাগার খোলা হয়েছে। এমনকি সেখানকার শিক্ষার্থীরাও ব্যাপকভাবে নজরুলের বিভিন্ন সৃষ্টিকর্ম নিয়ে চর্চা করছে। এছাড়া ভারত, চীন, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ বিশ্বের বহু দেশে নজরুলের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে চর্চা হচ্ছে। কিন্তু নজরুলের নিজ ভূমি বাংলাদেশে তাঁকে নিয়ে কতটা চর্চা হচ্ছে?
দেশের অনেক নজরুল গবেষকদের মতে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ব্যাপক হারে নজরুল চর্চা বাড়ছে। নজরুলের গান, গল্প, কবিতা, উপন্যাস নিয়ে তরুণ প্রজন্মের বিস্তর আগ্রহ রয়েছে।
অবশ্য নজরুল চর্চা অনেকটা শহর কেন্দ্রিক হয়ে গেছে বলে মনে করেন অনেক নজরুল গবেষকরা। বিশেষ করে শহরের বাইরে নজরুল সংগীত চর্চা হয় না বললেই চলে। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে আয়োজনগুলো নজরুলের জন্মবার্ষিকী কিংবা মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্র করেই হচ্ছে।
এক সাক্ষাৎকারে নজরুল সঙ্গীতশিল্পী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত মোস্তফা বলেন, ‘ঢাকার বাইরে বেশি বেশি নজরুল সংগীতের অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে নজরুল চর্চা বাড়ানো সম্ভব। স্থানীয় ধনী ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে মফস্বলে নজরুল চর্চা আরও বাড়বে।’
নজরুল সংগীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংগীতের প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে আরবি, ফার্সি এবং উর্দু ভাষার সংগীতের। তাই তাঁর গানের বাণী ও সুর ঠিক রেখে যে কোনোভাবে গাওয়া যেতে পারে। এমনটিই মনে করেন নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী। তাঁর কথায়, ‘দাদু নিজেও যন্ত্রসংগীত বেশ পছন্দ করতেন। নজরুলের গানের বানী ও সুর ঠিক রেখে যদি পাশ্চাত্য যন্ত্রানুসঙ্গের মিশেলে পরিবেশন করা হয় তাহলে নতুন প্রজন্ম অবশ্যই নজরুলের গান শুনবে এবং চর্চা করবে’
নজরুলের সৃষ্টি সবসময়ের এবং সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য – এ আবেদন ফুরিয়ে যাবার নয়। সে আবেদনকে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে বলে মনে করেন নজরুল গবেষকেরা।