সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এর যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নূরু এবং যুগ্ন-আহ্বায়ক রাশেদ খানকে পিস্তল নিয়ে এসে হত্যার হুমকি দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতারা। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হলে ১১৯ নাম্বার রুমে এই ঘটনা ঘটে।এ সময় পিস্তল নিয়ে রুমে আসে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি। তার সাথে ছিল মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী,চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম লিমন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়,রাত দেড়টার দিকে মহসীন হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি,মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী,চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম লিমন এর নেতৃত্বে ১৫/২০ জন আসে।এই সময় নুরুল হক নূরের রুমে ছিল আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ। হাফ প্যান্ট পরা অবস্থায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি তাদের হুমকি দিতে থাকেন।এ সময় তার পকেটে পিস্তল দেখা যায়।সরাসরি মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বাপ্পি বলে, ‘এই আন্দোলন করছিস তোরা সরকারের বিরুদ্ধে। তোদের একটাকেও ছাড়া হবে না।প্রজ্ঞাপনটা জারী হলে তোদের কুত্তার মতো পিটানো হবে।কুকুরের মতো গুলি করে রাস্তায় মারা হবে।তোরা তো কেউ বাঁচবি না।বেশি বাড়াবাড়ি করিস না।শেষবারের মতো মা বাবার দোয়া নিয়ে নিস।শুধু প্রজ্ঞাপনটা জারি হোক। তোদের কী অবস্থা করি।’
এই সময় মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী,চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম লিমন তাদের উপর হামলা করার জন্য বারবার সামনে আসে।কিন্তু অন্যরা তাদের নিবৃত্ত করে বলে জানা যায়।
জানতে চাইলে যুগ্ন-আহ্বায়ক নুরুল হক নূরু বলেন, ‘আমি এবং রাশেদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক রাশেদ আমার রুমে ছিল।এর মধ্যে চারুকলা অনুষদের ছাত্রলীগের সেক্রেটারী লিমন ফোন দিয়ে থ্রেট দেয় যে হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে।পিটাই নামাই দেওয়া হবে।আমরা নাকি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি।একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি ফোন নিয়ে বলেন,ছাত্রদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে মারছি।তোদের মতো পোলাপানকে খেয়ে দিতে দুই সেকেন্ড ও লাগবে না।তোগোরে গুলি কইরা মারি নাই শুধু কিছু সিনিয়রের নিষেধ ছিল।তা না হলে তোদের মতো কুলাঙ্গারদের রাখতাম না এই দেশে। শুধু কিছু সিনিয়রদের নিষেধ থাকার কারণে তোরা বেঁচে গেছস।তবে তোরা বাঁচবি না।কিছুদিন পর প্রজ্ঞাপনটা জারী হোক।দেখি তোদের কোন বাপ ঠেকায়।’
তিনি আরও জানান, ‘তার ১০ মিনিট পরে রুমে পিস্তল নিয়ে এসে বলে তোরা মা বাবা থেকে দোয়া নিয়ে নে।তোরা বাঁচবি না।তোদের গুলি করে মারবো।আমাকে মারতেও আসে।তারা আমার মোবাইলও নিয়ে যায়,যাতে আমি রেকর্ড করতে না পারি। আমরা এখন জীবননাশের হুমকির মুখে আছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি বলেন, ‘এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ও আমার পাশে রুমে থাকে।আমার এক ছোটো ভাই এর আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন গ্রুপে দেয়।পরে তার সাথে এই বিষয়ে বাকবিতন্ডা হয়।আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা। শেরপুর জেলা আওয়ামীলগের দপ্তর সম্পাদক। আমি তাকে বলেছি আন্দোলন করতেছস ঠিক আছে।অন্য কোনো ঝামেলায় জড়াবি না।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী বলেন, ‘তাকে কিছু করা হয়নি।সে ইস্যু বানাচ্ছে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আমাকে কেও অফিসিয়ালি অভিযোগ করেনি।কেউ অভিযোগ করলে দেখবো।’