‘সত্যিকার বৈদগ্ধ ও চিৎ প্রকর্ষের অধিকারী হতে হলে লাইব্রেরির সঙ্গে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি করা অবশ্যই প্রয়োজন।’ এই পটভুমিতে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মানসে বান্দরবান সদরস্থ লেমুজেরি ত্রিপুরা ছাত্রাবাসে একটি পাঠাগার স্থাপন করা হয়।ছাত্রাবাসে থাকার পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞান অর্জনের সাথে বাহ্যিক জ্ঞানকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে এই পাঠাগারটি অপরিসীম ভূমিকা পালন করে।
সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় কবলিত হয়ে বান্দরবান ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।ত্রিপুরা ছাত্রাবাসের লাইব্রেরী সহ পুরো ছাত্রাবাস টি বন্যার হাত থেকে রেহাই পায়নি।নষ্ট হয়েছে বহু সংগ্রহীত বই, আসবাবপত্র ও ছাত্রদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।ত্রিপুরা ছাত্র সংগঠন কর্তৃক বান্দরবান সেনা রিজিয়নে ছাত্রাবাস ও ছাত্রাবাসে স্থাপিত লাইব্রেরীর সংস্করণ ও সরঞ্জামাদি চাহিদা করলে সেনা রিজিয়ন কর্তৃক তা তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করে লাইব্রেরীতে বই রাখার একটি বুকশেলফ, তাদের চাহিদাকৃত বইয়ের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ,পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বঙ্গবন্ধু বিষয়কসহ শতাধিক বই এবং পড়ার জন্য চেয়ার টেবিল প্রদান করা করা হয়।
ভাষার এই মাসে মহিমান্বিত একটি দিন একুশে ফেব্রুয়ারি।দিনটাকে স্মৃতিময় করে রাখার লক্ষ্যে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বান্দরবান সেনা জোনের জোন কমান্ডার লে: কর্নেল এ এস এম মাহমুদুল হাসান,পিএসসি ত্রিপুরা ছাত্রাবাসের লাইব্রেরীর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও বই বিতরণ করেন।এসময় ছাত্রাবাসের লাইব্রেরীতে একটি বুকসেলফ,৩০ টি চেয়ার,দুইটি টেবিল এবং একশোর বেশি বিভিন্ন প্রসিদ্ধ লেখকদের বই ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম এর নেতৃবৃন্দকে হস্তান্তর করা হয়।এসময় রোয়াংছড়ি সেনা ক্যাম্প এর কমান্ডার মেজর এম.এম ইয়াসিন,জেলা পরিষদ সদস্য সত্যহা পাঞ্জেরী ত্রিপুরা,ইউএনডিপি এর জেলা প্রধান খুশী রয় ত্রিপুরা,সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অংসাহ্লা মারমা,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কারবারি ও সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।বান্দরবান সেনা জোন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি তে বিষয়টি নিশ্চিত করে।পাঠাগারে সরঞ্জামাদি বিতরণকালে প্রধান অতিথি বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস ভাষা শহীদদের মাস।এই মাস ও দিনকে গভীরভাবে স্মরণ করতে এই দিনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।ভাষা শহীদের বিনিময়ে আজ আমরা এই স্বাধীন ভূখণ্ডে বসবাস করছি।পেয়েছি স্বাধীন রাষ্ট্র তাদের এই আত্ম ত্যাগ কখনো আমরা ভুলবো না।শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন পাঠ্যপুস্তক হতে জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি লাইব্রেরী মানুষের বাহ্যিক জ্ঞানকে আরো বেশি প্রসারিত করে।তোমরা আগামী ভবিষ্যৎ।বই পড়া মানুষকে যেমন আনন্দ দেয় তেমনি জ্ঞানী করে তোলে। সুতরাং সবকলের প্রতি এই আহবান থাকবে যে,এই পাঠাগারটিকে সদ্য ব্যবহার করে অর্জিত জ্ঞানকে নিজের দেশের জন্য বিলিয়ে দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।সেনা রিজয়নের এই মহতী কর্মকাণ্ডগুলো বর্তমানে ন্যায় ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য যে,ইতিপূর্বে বান্দরবান সেনা জোন ও রিজিয়ন কর্তৃক একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই,শিক্ষা উপকরণ,শীতবস্ত্র ও প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যেও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।