পাহাড়ে নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।রবিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে মুনলাই পাড়া কমিউনিটি সেন্টারে এই বৈঠক শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক চলে।
সমঝোতা তিনটি হল,আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কেএনএফ ও নিরাপত্তা বাহিনী কোন পক্ষই সংঘাতে যাবে না।কেএনএফসহ বম সম্প্রদায়ের যারা উদ্বাস্তু রয়েছে তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা ও বম সম্প্রদায়ের শিক্ষা চিকিৎসা উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা করবে সরকার।
বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা,কেএনএফ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য লাল এং লিয়ান বমসহ কমিটির ৫ সদস্য,নিরাপত্তা বাহিনী,জেলা প্রশাসন,পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি জানিয়েছেন, প্রথম বৈঠক খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে।শান্তিপ্রতিষ্ঠায় কেএনএফ সদস্যরা খুবই আন্তরিক। বৈঠকে যারা উপস্থিত ছিল তারা সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছেন।তিনটি বিষয়ে আপাতত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।আগামীতে বৈঠকে আরও বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে,বৈঠককে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ওই এলাকায়।সেনাবাহিনী বিজিবি পুলিশ গোয়েন্দা সংস্থা সদস্যরা নিরাপত্তা গ্রহণ করে।এর আগে কেএনএফ শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে বেশ কয়েকবার ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করলেও এই প্রথম তারা সরাসরি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছে।শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির কাছে কেএনএফ ছয় দফা দাবি দাওয়া পেশ করেছে।
গত বছরের আগস্ট থেকে পাহাড়ে কেএনএফ তৎপরতা শুরু করে।এদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে এ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ৫ সদস্যসহ ২২ জন নিহত হয়।কেএনফের ১৭ সদস্যকে আটক করা হয়।এই সশস্ত্র সংগঠনটির সাথে নতুন গজিয়ে ওঠ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিদ্দাল শারক্বিয়ার সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।জঙ্গিদের টাকার বিনিময়ে কেএনএফ প্রশিক্ষণ দিত বলিও অভিযোগ ছিল।কেএনএফ এই এর তৎপরতায় বান্দরবানে পর্যটন শিল্পের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।বান্দরবানের কয়েকটি উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয় প্রশাসন থেকে। পাহাড়ে চলমান এই সংঘাত নিরসনে গঠিত শান্তিপ্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে এই প্রথম কেএনএফ সরাসরি বৈঠকে বসেছে।