বান্দরবানে সম্প্রতি আট থেকে দশ দিনের টানা বর্ষনে বান্দরবান জেলার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় প্লবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ সরকারি অফিস, বাসভবন,বসতবাড়ি ও অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট।এ বন্যার ফলে জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিসের সরঞ্জামাদি ও জেলায় নির্মিত অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।এছাড়াও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বান্দরবান এর জেলা কারাগার,বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন,বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়, পাবলিক লাইব্রেরীসহ সরকারি গুরুত্বপুর্ন বিভিন্ন দপ্তর ও কার্যালয়।পাবলিক লাইব্রেরির তিরিশ হাজার বই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ও আর্থিক অবস্থা নিরুপনে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর এর কর্মকর্তারা।এর মধ্যেই ভয়াবহ এই বন্যা ও অতি বৃষ্টিতে এলজিইডি এর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি তথ্য মিলেছে।জানা যায়,মাঠ পর্যায়ে কর্মরত এলজিইডি প্রকৌশলীদের তথ্যমতে এ সড়কগুলি সংস্কার করতে প্রায় দেড়শো কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হতে পারে।এছাড়া জেলা সদরের এলজিইডি অফিসের সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ মেরামত করতে আরও প্রায় ২০ লক্ষ টাকার উপরে লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে,এলজিইডির বিভাগের সড়কগুলোর বেশির ভাগ স্থানে নিচের মাটি সরে গিয়ে ধসে গেছে।কোথাও কোথাও পাহাড় ধসে পড়ে রাস্তার অর্ধেক অংশ ভেঙ্গে গেছে।এসব সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগি হয়ে উঠেছে।ইতিমধ্যে ভোগান্তিতে পড়েছে এসব সড়কে চলাচলকারী সাধারণ জনগণ।বান্দরবান এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে,বান্দরবান জেলার অভ্যন্তরের খানসামা-বাঘমারা সড়ক, হলুদিয়া-ভাগ্যকুল সড়ক,থানচি-বলিপাড়া, রুমা-লিকা পাড়া সড়ক,আলীকদম উপজেলার দোছড়ি সড়ক,নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সড়ক,লামা-সুয়ালক সড়ক,লামা-আজিজনগর সড়ক,ফাইতং-লামা সড়ক বান্দরবান সদরের কালাঘাটা-তারাছা সড়ক ও রোয়াংছড়ি-লিরাগাও সড়কের মধ্যে সম্প্রতি অতিবৃষ্টিপাতে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন,এসব সড়কের বেশির ভাগই যানচলাচলের অনুপযোগি হয়ে উঠেছে।কিছুকিছু সড়কে যান চলাচলতো দুরের কথা,পায়ে হেটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে।এগুলো দ্রুত মেরামত করা না গেলে যান চলাচলের সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।হলুদিয়া-ভাগ্যকুল সড়কে নিয়মিত পণ্য পরিবহন করা বিভিন্ন পেশার শ্রমিকরা জানান,এবছর বান্দরবানের সড়কগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।এগুলো মেরামত না করা হলে আমাদের গাড়ী চালানো সম্ভব নয়।তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক কষ্টে গাড়ী চালাচ্ছি।আলীকদম এর বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, রাস্তাগুলো এমনভাবে ধসে গেছে,এসব সড়কে পায়ে হাটাও এখন কষ্টকর মনে হচ্ছে।আমরা দ্রুত এসব সড়কগুলো সংস্কার চাই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.জিয়াউল ইসলাম মজুমদার জানান,বান্দরবানে অতিবর্ষণে প্লাবিত হয়ে ও সড়কের মাটি সরে গিয়ে ৯শ কি:মি: সড়কের মধ্যে প্রায় ৩শ কি:মি: সড়কের ক্ষতি হয়েছে।এসব সড়ক মেরামতে প্রায় দেড়শো কোটি টাকারও বেশি খরচ হবে।এছাড়া অফিসের সরঞ্জামাদিতে আরো ২০ লক্ষ টাকার বেশি ব্যয় হবে।আমরা প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।বরাদ্ধ পেলেই কাজ শুরু করবো।