‘আন্তঃপ্রজন্ম সংহতি: সকল বয়সের জন্য একটি বিশ্ব তৈরি করা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বান্দরবান জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত আমাদের জীবন,আমাদের স্বাস্থ্য,আমাদের ভবিষ্যৎ প্রকল্পের সহযোগিতায় বান্দরবানে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উদযাপন করা হয়েছে।দিবসটি উপলক্ষ্যে ১২ আগস্ট (শুক্রবার) বান্দরবানের বালাঘাটাস্থ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পুলুপ্রু’র সঞ্চালনায় ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ক্যনে ওয়ান চাক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুউদ্দিন মোহাম্মদ হাসান আলী।এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।অনন্যা কল্যাণ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ডনাই প্রু নেলী ও ডেপুটি কোর্স কো-অর্ডিনেটর ইকবাল কাউসার এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।সভায় যুব দিবসের তাৎপর্য ও যুবদের ভূমিকা নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড শোর মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের মাস্টার ট্রেইনার সুমিত বণিক।
সুমিত বণিক তার উপস্থাপনায় বলেন, ‘আমরা অনেক সময় মুষ্টিমেয় যুবদের এই অধঃপতনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাই না, কিন্তু সামগ্রিকভাবে আমরা যদি আগামীর সঠিক নেতৃত্ব, টেকসই সামাজিক উন্নয়নের কথা ভাবি, তাহলে যুবদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এটি কোনভাবেই সম্ভব নয়, তাই নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও যুবসমাজকে অপরাধ ও সহিংসতার পথ থেকে ফেরাতে হবে। যুবদের সুপ্ত প্রতিভা ও সম্ভাবনাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে, কারণ তারাই সমাজ ও দেশের আশার আলো।এসময় তিনি আরো বলেন, যুবদের মাঝে মূল্যবোধ,দেশপ্রেম, নৈতিকতার শিক্ষাকে সঞ্চারিত করতে হবে,এক্ষেত্রে ব্যক্তিক উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক,রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও সদিচ্ছা খুব জরুরী।’
অনন্যা কল্যাণ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ডনাই প্রু নেলী তার বক্তব্যে বলেন,‘আজকে আমি খুব আনন্দিত, কারণ আমি নিজেও একসময় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষনার্থী ছিলাম।তিনি আরো বলেন,আমরা কেন অন্যের গলগ্রহ হয়ে থাকবো। আমাদের মেধা, সাহস, কৌশল প্রয়োগ করে আমরা নিজেরাই এগিয়ে যেতে পারি। এজন্য দৃঢ় প্রত্যয় দরকার। এসময় তিনি আরো বলেন,কাজ করতে গিয়ে জীবনের অনেক কঠিন বাস্তবতা দেখেছি, অনেক বাধা মোকাবেলা ও অপবাদের বোঝা মাথায় নিতে হয়েছে,তবে থেমে যাইনি, অদম্য সাহস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছি,আমিও একসময় সংগঠন তৈরি করা সম্পর্কে জানতাম না,এই যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরই কিন্তু আমাকে রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে,আর যুব উন্নয়নের হাত ধরে আজকের এই ‘অনন্যা’র যাত্রা শুরু’।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুল ইসলাম বলেন,‘আজ একঝাঁক যুবদের মাঝে উপস্থিত হতে পেরে নিজের কাছে খুব ভালো লাগছে।আমাদের বিশাল সংখ্যক যুব জনগোষ্ঠীকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আমাদের প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন অবশ্যই সম্ভব।আর যদি সেটা করতে না পারি তাহলে কিন্তু এর বিরূপ আমাদের দেশের সকল ক্ষেত্রে পড়বে।আমাদের যুব সমাজের মধ্যে আজকাল কিছু হতাশা ভর করেছে,কিন্তু হতাশাগ্রস্থ না হয়ে নিজের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত যে প্রতিভা ও সম্ভাবনাগুলো রয়েছে সেটাকে বিকশিত করতে হবে।তাছাড়া বিশ্বে যারা আজ সেরা ধনী,তারা কিন্তু কেউ চাকুরীজীবি না,তারা প্রত্যেকেই ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা,চাকুরি মানেই সব নয়। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমাদের মেধা,পরিশ্রম,প্রচেষ্টাকে যদি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি,তাহলে জীবনে সাফল্য অর্জন অসম্ভব বিষয় নয়,আর নিজের উদ্ভাবনী মেধা দিয়ে শুধু যুবরা নিজে উপকৃত হবে তা নয়,এটি সমাজ ও দেশকে আলোকিত করবে।