বহদ্দারহাটের একটি হোটেলে কক্সবাজারের পেকুয়ার আলী মাস্টার পাড়ার ফরিদুল ইসলাম সাদা ভাত, রুই মাছ আর চা’র বিল দিয়েছেন ৩৫০ টাকা। ইএফডি মেশিনে এর বিপরীতে ভ্যাট দিয়েছেন ১৬ টাকা ৬৭ পয়সা।এত কম ভ্যাট দিয়েই তিনি লটারিতে পেয়ে গেছেন প্রথম পুরস্কার ১ লাখ টাকা।
সোমবার (২৫ জুলাই) ফরিদুলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কাস্টমস্ এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রাম পরিদর্শনে আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) ড. মইনুল খান।
ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেনের সভাপতিত্বে আগ্রাবাদের সৈকত সম্মেলন কক্ষে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত রাজস্ব আহরণ বিষয়ক পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ড. মইনুল খান। সভার শুরুতে জুন মাসের ইএফডি লটারি বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
ফরিদুল ইসলাম ছাড়াও পুরস্কার জিতেছেন মোগলটুলীর মো. শফিকুল ইলাম এবং আলী মাঝির পাড়ার মো. নাছির উদ্দিন। শফিকুল ৬০০ টাকার মিষ্টি কিনে ৭৮ টাকা ২৬ পয়সা এবং নাছির ৯০ টাকার সবজি ভাজি, পুডিং কিনে ৪ টাকা ২৮ পয়সা ভ্যাট দিয়েছিলেন।তারা দুইজন চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকার চেক পেয়েছেন।
ড. মইনুল খান বলেন, চট্টগ্রামে পুরস্কার বিজয়ীদের সংখ্যা বেশি। প্রায় প্রতি মাসে পুরস্কার দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। ইএফডি চালান নিলে জনগণ প্রদত্ত ভ্যাটে সরকারের রাজস্ব সুরক্ষিত হয়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে পারলে ভ্যাট আহরণের পাশাপাশি সবার মধ্যে অনন্য সংযোগ স্থাপন করা যাবে। দ্রুতগতিতে ও ব্যাপকভাবে সব জায়গায় ইএফডি বসানো গেলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়বে।
ভোক্তা বা ক্রেতা কর্তৃক প্রদত্ত মূসক/ভ্যাট যাতে সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত হয়, সে লক্ষ্যে বিভিন্ন দোকানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি কেনাকাটার পর ইএফডি মেশিন থেকে চালান গ্রহণ করলে ক্রেতা কর্তৃক পরিশোধিত ভ্যাট/মূসক সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত হবে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ইতিপূর্বে স্থাপিত ১ হাজার ৪৬০টি মেশিনের পাশাপাশি আরোও ৩৬০টি মেশিন স্থাপনের কাজ চলছে। প্রতিটি ইএফডি মেশিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে অনলাইনে সংযুক্ত রয়েছে। এর ফলে ক্রেতাদের প্রদত্ত ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ক্রেতাদের/ভ্যাটদাতাদের উৎসাহিত করতে প্রতি মাসের ৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি বিশেষ লটারির আয়োজন করেছে। এ লটারিতে ১০১টি পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন সবাইকে কেনা-কাটার সময় চালান সংগ্রহ করে তা লটারির জন্য সংরক্ষণ করার অনুরোধ জানান।
ড. মইনুল খান রাজস্ব আদায়ে কর্মকর্তাদের আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন।