বান্দরবান জেলা প্রশাসন পরিচালিত পর্যটনকেন্দ্র মেঘলায় দিনদুপুরে এক পর্যটকের মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়।মোবাইল ছিনতাই এর ঘটনা উল্লেখ করে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি হাতে লেখা আবেদন পত্র অবহিত করার জন্য ভুক্তভোগী পর্যটক মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র এর কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মীদের হাতে দেন।ঘটনার একদিন পর মোবাইল ছিনতাই এর সাথে জড়িত দুই যুবককে চিহ্নিত করে মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কর্মীরা।পরে তাদেরকে আটক করতে সক্ষম হয় ট্যুরিস্ট পুলিশ।
সূত্রে জানা যায়,ঈদ উপলক্ষে বান্দরবানে বেড়াতে আসেন ঢাকার মহাখালী এলাকার সিয়াম আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি।রোববার (১৭ জুলাই) দুপুরে তিনি বান্দরবান সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণে যান।
এসময় তিনি পর্যটন কেন্দ্রটির বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরতে ঘুরতে কোলাহল এর বাইরে নিরব একটি পয়েন্টে চলে যান।এক পর্যায়ে বান্দরবানের মেঘলাস্থ তালুকদার পাড়ার মো.আব্দুল্লাহ (২১) নামে এক বখাটে যুবক তাকে অনুসরণ করেন এবং ছবি তোলার এক ফাঁকে সিয়াম আহমেদ চৌধুরীর মোবাইল ফোনটি হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পাহাড়ি পথে পালিয়ে যান।
এদিকে মোবাইল ছিনতাই এর ঘটনাটি জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর নজরে আসলে তাৎক্ষণিক তিনি মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রে প্রথমবারের মতো একজন পর্যটক এর মোবাইল ছিনতাই এর ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নিতে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন এবং দ্রুত ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনতে নির্দেশনা দেন।
পরে জেলা প্রশাসক এর এমন কঠোর বার্তা পেয়ে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে স্থানীয় ট্যুরিস্ট পুলিশ ও মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা মেঘলাস্থ তালুকদার পাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অভিযান পরিচালনা করেন।এসময় জয়িতা ভবনের পার্শ্ববর্তী ভান্ডারি পাড়া নামক একটি এলাকা থেকে সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে দুই যুবককে আটক করা হয়।সঙ্গে সঙ্গে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।
আটক যুবকদের মধ্যে একজন এই ছিনতাই এর সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।অন্যজন বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কম দামে ফোন কেনাবেচা করার কথা স্বীকার করেন।আটক ব্যাক্তিরা হলেন বান্দরবান পৌরসভার মেঘলা তালুকদার পাড়া এলাকার মো.নুরের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (২১) এবং পর্যটন চাকমা পাড়ার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো.মহিউদ্দিন (২২)।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসন এর নির্বাহী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,ছিনতাইকারী মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীর টপকিয়ে পর্যটন কেন্দ্রটির ভেতর অনুপ্রবেশ করে মোবাইলটি ছিনতাই করেছে।পর্যটক এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যটন কেন্দ্রের কর্মীরা তৎপর রয়েছে।তাদেরকে আরও সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এই প্রতিবেদন লেখাকালীন সময় পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র।পরে ট্যুরিস্ট পুলিশের বান্দরবান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম কে এবিষয়ে জানতে ফোন করা হয় তবে তিনি ফোন কলটি রিসিভ না করায় মামলা সংক্রান্ত বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে এমন ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে মেঘলায় কর্মরত জেলা প্রশাসন এর কর্মীরা।এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তাদের কে পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।পর্যটকদের সুরক্ষিত পর্যটন সেবা নিশ্চিত করার জন্য সতর্কতার সাথে প্রত্যেক কে দায়িত্ব পালন করে যেতে বলা হয়েছে।