তিন বিমানবন্দরে হবে করোনার পিসিআর টেস্ট


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:৪৪ : পূর্বাহ্ণ 226 Views

দেশের তিন বিমানবন্দরে জরুরিভিত্তিতে করোনা সংক্রমণ শনাক্তকরণের পিসিআর টেস্ট চালুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে বিদেশগামীরা চার থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে করোনা সংক্রমণের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন।

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বৈঠকে সরকারি ঋণ আইন-২০২১, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন-২০২১ এবং বাংলাদেশ পুলিশ (অধস্তন কর্মচারী) কল্যাণ তহবিল আইন-২০২১-এর খসড়ারও অনুমোদন দেওয়া হয়।

মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় দুটি বিষয় এসেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিভিন্ন জায়গায় (দেশ) এখন নতুন করে কন্ডিশন দেওয়া হচ্ছে যে, ফ্লাইয়ের ৪ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর টেস্ট করাতে হবে। কয়েকটি দেশ থেকে এ শর্ত দিয়েছে। আজ সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। ভেরি কুইকলি দুই বা তিন দিনের মধ্যে এয়ারপোর্টেই একটা টেস্টিং ফ্যাসিলিটিজ করা, যাতে ফ্লাই করার চার ঘণ্টার মধ্যে টেস্ট করা যায়। প্রাথমিকভাবে ঢাকা বিমানবন্দরে হবে।

কিন্তু আলোচনায় তিনটি এয়ারপোর্টই (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর) আছে।
বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতির নির্দেশ : বৈঠকে বন্যার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বন্যা মোকাবিলায় তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় কৃষিমন্ত্রীকে আমন চাষে কোনো অসুবিধা হলে ট্রান্সপ্লান্ট আমনের (টি-আমন) জালা (ধানের চারা) প্রস্তুত রাখতে বলেন। কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, বন্যার কারণে এক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন যেসব এলাকায় পানি বেড়ে যায়, বিশেষ করে গোয়ালন্দের পর যমুনা ও পদ্মা যেখানে একসঙ্গে হয়েছে, এসব এলাকার জন্য প্রস্তুত থাকতে। কোনো এলাকায় যদি ভাদ্র মাসে পানি আসে আর বঙ্গোপসাগরে যদি জোয়ার থাকে তাহলে পানি নামতে দেরি হয়। সেক্ষেত্রে আমন চাষে কোনো অসুবিধা হলে, টি-আমন জালা (ধানের চারা) প্রস্তুত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন।

মিথ্যা তথ্যে সঞ্চয়পত্র কিনলে জেল-জরিমানা : মিথ্যা তথ্য দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে সরকারি ঋণ আইন-২০২১-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনো ব্যক্তি সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের স্বত্ব অর্জনের উদ্দেশ্যে মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করলে অনধিক ছয় মাস কারাদন্ড অথবা অনধিক ১ লাখ টাকা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন।

যে টাকা ডিপোজিট করা হবে তা নিয়ে যদি মিথ্যা কথা বলেন, কোথা থেকে এ টাকা এলো, যদি ইনকাম ট্যাক্স ইস্যু করা না থাকে, যদি মিথ্যা তথ্য দেন, সেক্ষেত্রে এ শাস্তি দেওয়া হবে। জনগণকে এটা ওপেনলি জানানো হবে, সরকারি ঋণ আইনের মাধ্যমে কত টাকা হলো এবং এর কী অবস্থা কিংবা মুনাফা বা সুদ দেওয়া হলো, তা জনগণকে জানানো হবে। সরকারি ঋণ অ্যাক্ট-১৯৪৪ ছিল, প্রয়োজনীয় অ্যামেন্ডমেন্ট করে বিভিন্ন সময়ে তা পরিবর্তন করা হয়েছে। বাস্তব অবস্থার পরিস্থিতিতে ঋণ পদ্ধতি ও ডিপোজিট সিস্টেমও চেঞ্জ হয়ে গেছে। তাই নতুন আইন করতে হচ্ছে। বিস্তারিত আলোচনার পর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মেয়াদ বাড়ল বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের : বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য ২০১০ সালে যে আইন করা হয়েছিল, তার মেয়াদ বাড়ছে। সে লক্ষ্যে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন-২০২১-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য ২০১০ সালে একটা আইন করা হয়েছিল। জরুরি পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ঘাটতি মোকাবিলায় আইনটি কার্যকর। এ আইনের মেয়াদ দুই বছরের জন্য বৃদ্ধি করা হয়, দুই বছর অন্তর-অন্তর। আইনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের এবং ২০৪০ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ার ক্ষেত্রে যে পরিকল্পনা আছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহে তা যেন নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা যায়, এ জন্য ২০২৬ সাল পর্যন্ত এটার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।

পুলিশ কল্যাণ তহবিল আইন : ‘বাংলাদেশ পুলিশ (অধস্তন কর্মচারী) কল্যাণ তহবিল আইন-২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আগে এটা অধ্যাদেশ ছিল। সামরিক শাসনের সময় যে অধ্যাদেশ ছিল, সেগুলো বাদ দিয়ে নতুন আইন করতে হবে। সে জন্য বাংলাদেশ পুলিশ (অধস্তন কর্মচারী) কল্যাণ তহবিল আইন-২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে সম্পাদিত সামরিক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তির খসড়ার ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!