আসন্ন ঈদুল আজহায় পশুর চামড়া নিয়ে কারসাজি রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারি করবে। চামড়া ব্যবসার কারসাজিতে থাকা সব সিডিকেটকে নজরদারিতে রাখা হবে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির পশু পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে বিশেষ নজরদারি থাকবে। যানবাহন যত্রতত্র থামানো যাবে না। শিল্প এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি ওইসব এলাকায় যে কোনো নাশকতা প্রতিরোধে গোয়েন্দারা তৎপর থাকবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজধানীতে কোথায় গরুর হাট বসবে, সেটা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কতগুলো হাটের অনুমোদন তারা দিয়েছে, সেটা জানা না থাকলেও এবার অনেক হাট বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এ ক্ষেত্রে অনলাইন গরুর হাটকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হবে। জাল নোট শনাক্তকরণে মেশিন থাকবে পশুর হাটে। অজ্ঞান ও মলম পার্টির বিরুদ্ধেও সতর্ক প্রহরা থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৃষ্টিতে রাস্তা খারাপ হওয়ায় সড়ক-মহাসড়কে যানজট রয়েছে। এর সমাধান বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ জন্য সড়ক বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারা যতটুকু সম্ভব রাস্তা সংস্কার করবে। বিশেষ করে গাজীপুরের রাস্তা এবং টাঙ্গাইলের একটি অংশে দ্রুত সংস্কারের জন্য বলা হয়েছে। আরিচা, দৌলতদিয়া-মাওয়া, বাংলাবাজারসহ সব ফেরিঘাট যানজটমুক্ত রাখতে আগাম প্রস্তুতি থাকবে। নৌযানগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা যাবে না।
তিনি বলেন, পশুর চামড়া কেনাবেচায় সিন্ডিকেট প্রতিরোধে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঈদের আগেই দাম নির্ধারণ করে দেবে। চামড়া পাচার রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগে থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ঈদ উপলক্ষে খাদ্যদ্রব্য, বিশেষ করে মসলাসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও ভেজাল মেশানো রোধে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট থাকবে। ঈদের সময় সড়ক-মহাসড়ক এবং শিল্পাঞ্চলে অনাকাঙ্খিত যে কোনো জরুরি উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স এবং কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত থাকবে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়ার জন্য বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নেতারা নিশ্চিত করেছেন, গতবারের মতো এবারও তারা শ্রমিকদের বেতন সময়মতো পরিশোধ করবেন। গতবার শ্রমিকদের ছুটি নিয়ে একটু জটিলতা হয়েছিল। সেটা যাতে এবার না হয় তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তারা সবার সঙ্গে আলোচনা করে আগেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করোনা মোকাবিলায় যেসব নির্দেশনা দেবে, তা যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য সবাই প্রস্তুত থাকবেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সবাইকে আমাদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
কোরবানির হাটে জনসমাগম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের দায়িত্ব হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের। আইনটা তাদের। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করেছে। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অনুরোধ অনুযায়ী কাজ করছে। সারাদেশ থেকে যেসব ব্যাপারী ঢাকায় আসবেন, তারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, তাও নজরদারিতে থাকবে।