করোনাকালীন চিকিৎসাসেবায় রীতিমতো বিপ্লব ঘটাতে চলেছেন দেশের এক তরুণ বিজ্ঞানী। চিকিৎসক যত দূরেই থাকুক না কেন নির্দেশনা মেনে রোগীর সুচিকিৎসা দেবে রোবট। পাশাপাশি রোগীর অক্সিজেন সেচুরেশন কমে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উৎপাদন করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারবে। এমনই একটি রোবট উদ্ভাবন করেছেন বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী শুভ কর্মকার। খবর অনলাইনের।
তার রোবট শুধু চিকিৎসাসেবায় অবদান রাখবে না- একই সঙ্গে ওষুধ আনা-নেয়া, অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দেয়া, রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ সরবরাহ করা, সংক্রমিত রোগীর বর্জ্য তার শরীরে থাকা ইউভি রশ্মির মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করতে পারবে। নতুন উদ্ভাবিত এই রোবটের নাম ‘সেবক’। শুভ কর্মকার জানান, চিকিৎসাসেবায় কাজ করবে বলে এর নাম রাখা হয়েছে ‘সেবক’। চিকিৎসাক্ষেত্রে সরাসরি সহযোগিতার জন্যই আমার এই প্রচেষ্টা। আমার এর আগে বানানো রোবট ‘রবিন’ ছিল মানবাকৃতির। কোথাও আগুন লাগলে বা গ্যাস লিকেজ হলে সঙ্কেত পাঠাতে পারত। এখন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব একটি সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করছে। এ ক্ষেত্রে আমি কীভাবে সাহায্য করতে পারি- এমন প্রশ্ন থেকেই দ্বিতীয় রোবট ‘সেবক’ প্রকল্পে হাত দেই। তিন মাসের প্রচেষ্টায় একটি মডেল বাস্তবায়ন করেছি।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের কালুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শুভ কর্মকার। তার বাবা সন্তোষ কর্মকার। দুই ভাই-বোনের মধ্যে বড় শুভ গৈলা ভেগাই হালদার মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় শহরের অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়ে। ভর্তির পর একদিনও শ্রেণী কক্ষে যেতে পারেননি। সেই সুবাদে নিজের রোবট নিয়ে কাজ করার বিস্তর সুযোগ হয়েছে। ২০১৮ সালের ১৫ মে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের উদ্ভাবন বিষয়ক জাতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় হয়ে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের কাছ থেকে পুরস্কার লাভ করে রবিনের উদ্ভাবক শুভ কর্মকার। ২০১৯ সালের ২৭ জুন ৪০তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের হাত থেকে পুরস্কার নেয়। এছাড়াও সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০১৯ এ বিজ্ঞান বিষয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে ১ম হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিয়ে ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মণির হাত থেকে ‘বছরের সেরা মেধাবী’ পুরস্কার নেয় শুভ কর্মকার। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় রোবট উদ্ভাবন করলেন এই খুদে বিজ্ঞানী।