সারাদেশের সাড়ে ছয় শ’ থানায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ‘রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের’ আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। ‘অপারেশন কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারে’ বসে দেশের সকল থানা ও পুলিশের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে পুলিশ কর্মকর্তারা। দেশের প্রতিটি থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষ, হাজতখানা, সেন্টি বক্স নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশের এই সেন্টার। অত্যাধুনিক এই নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে ‘অপারেশন কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারে’ বসে থানা পুলিশের ঘুষ, দুর্নীতি, দুর্ব্যহার, অনিয়ম, অন্যায়, অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বে অবহেলা পর্যবেক্ষণ করা যাবে যা থানা পুলিশের সব ধরনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে পুলিশ প্রশাসনের। পুলিশে এটাই প্রথম ডিজিটাল পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি। পরীক্ষামূলক হিসাবে ঢাকা রেঞ্জের ১৪ জেলার ১০১ থানাকে এই পরিকল্পের আওতায় এনে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, চারটি ফেরিঘাট এবং মহাসড়কের রোড জংশন, বিভিন্ন জাতীয় দিবস এবং ধর্মীয় উৎসবসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর আওতায় চলে আসবে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের ভিশন রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসহ মানুষজনের সেবা। আইজিপির নেতৃত্বে সারাদেশের থানা-পুলিশ চালু হয়েছে এই প্রকল্প। এই পরিকল্পনার উদ্ভাবক, তত্ত্ববধায়ক ও নেতৃত্ব দানে আছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। ঢাকা রেঞ্জের থানাগুলোকে রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনার জন্য অপারেশন কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার বসানো হয়েছে ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে। ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের সেন্টার থেকে উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং করা হচ্ছে থানাগুলোকে। থানার ডিউটি অফিসার, হাজতখানা এবং সেন্ট্রিবক্সে বসানো আছে নাইট ভিশন মাল্টিকালার আইপি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরার ফুটেজ সরাসরি দেখা যাচ্ছে অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার থেকে। সেখান থেকেই ক্যামেরা ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে আশপাশের দৃশ্যও দেখতে পাচ্ছে রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা।
যেভাবে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে ॥ পুলিশ কর্মকর্তার যখনই কোন থানার কার্যক্রমে অসঙ্গতি চোখে পড়ছে তখনই তার স্ক্রিন শট নিয়ে নেয়া হচ্ছে। হিকভিশন ব্র্যান্ডের ইজেটভি আইজেট ক্যামেরার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য কথা বলছেন লাইভে। অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছেন সেবা প্রার্থীও। অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারে কর্মরত কর্মকর্তারা কথা বলার পাশপাশি থানার লাইভ ভিডিও দেখতে পেলেও থানার পুলিশ সদস্যরা কোন ভিডিও ফুটেজ দেখতে পান না। কোন ধরনের অসামঞ্জস্য দেখে যখন ঢাকা রেঞ্জের অফিসে স্থাপিত অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার থেকে কথা বলা হচ্ছে তখন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা, সেবা প্রার্থীসহ উপস্থিত সবাই অনেক ক্ষেত্রেই চমকে উঠছেন। প্রাথমিকভাবে অনেকেই বুঝতে পারছে না কোথা থেকে আওয়াজ আসছে। কোন কোন পুলিশ সদস্য এমনও মনে করছেন তার পাশে থাকা ওয়্যারলেস সেট থেকেই বুঝি কথা বলা হচ্ছে। তখন ওই পুলিশ সদস্যকে বলা হয়- ‘আপনি সিসি ক্যামেরার দিকে তাকান’-। আমি রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় থেকে বলছি। আকস্মিক পরিস্থিতি সামলে দায়িত্বরত ওই পুলিশ সদস্য বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
মনিটরিং রেকর্ড তথ্য চিত্র ॥ রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কিভাবে চলে তার অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারের রেকর্ডের বিবরণ :
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি অফিসের রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনা অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারের রেকর্ড করা তথ্যে দেখা যায়, শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষ। দীর্ঘ সময় এখানে কোন পুলিশ সদস্য দায়িত্বে ছিলেন না। চেয়ার ছিল ফাঁকা। টেবিলে কিছু জিনিসপত্র ছিল। এই দৃশ্যটির স্ক্রিন শট নিয়ে রেখে দেয় ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার। ঢাকায় বসে প্রত্যন্ত অঞ্চল শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানায় কখন কি হচ্ছে, কে কাজে ফাঁকি দিচ্ছে, কেউ ঘুষ বা দুর্নীতি করছে কিনা, সেবাপ্রার্থীর অবহেলা করার বিষয়সহ সার্বিক বিষয়ে তদারকি করা যাচ্ছে। এমনভিভাবে ঢাকার কালীগঞ্জ থানা, নবাবগঞ্জ থানায় স্ক্রিন শট নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা দেখতে পান পুলিশের দায়িত্ব পালনের দৃশ্য। কেউ ইউনিফর্ম ছাড়া সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন এমন ঘটনাও পর্যবেক্ষণ করছেন ঢাকায় বসেই। ঢাকা রেঞ্জের অধীন একটি থানায় দেখা যায়, থানায় আসা সেবাপ্রার্থীদের দ্রুত সেবা দেয়ার ব্যবস্থা না করে দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনে ব্যস্ত ছিলেন ডিউটি অফিসার। নাইট ভিশন মাল্টিকালার আইপি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সে দৃশ্য। এর স্ক্রিন শট নেয়া হয়। এমন ঘটনাতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের তিরস্কার করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের কর্মকর্তা।
বর্তমান যে অর্গানোগ্রামে কার্যক্রম চলছে ॥ রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনা অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারে একজন ইন্সপেক্টর, একজন এসআই এবং দু’জন কনস্টেবল সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। কোন অসঙ্গতি দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। অর্গানুগ্রাম অনুযায়ী, অতিরিক্ত ডিআইজির (অপস এ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স) তদারকি করবেন। শিটফ ইনচার্জ প্রতি শিফট শেষে অতিরিক্ত ডিআইজির কাছে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। কোন থানার ডিউটি অফিসার, হাজতখানা এবং সেন্ট্রি পোস্টের ক্যামেরা বন্ধ থাকলে তার কারণ নির্ণয় করে তাৎক্ষণিকভাবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন শিফট ইনচার্জ।
উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ ॥ অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পর ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), জেলার পুুলিশ সুপার (এসপি)কে জানানো হয়। এরপর ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী পুলিশ সুপার বা অফিসার ইনচার্জ সঙ্গে সঙ্গেই যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনা অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারটি চালু থাকছে উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় ২৪ ঘণ্টা। এই ব্যবস্থায় মনিটরিং করা হচ্ছে থানাগুলোকে। থানার ডিউটি অফিসার, হাজতখানা এবং সেন্ট্রিবক্সে বসানো আছে নাইট ভিশন মাল্টিকালার আইপি ক্যামেরা। থানা পুলিশে কখন কি হচ্ছে, তার সবটাই রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় এসে যাচ্ছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশের থানাগুলোর ডিউটি অফিসারের কক্ষ, হাজতখানা এবং সেন্ট্রিবক্স। এই তিনটি স্থানকে ঘিরেই আবর্তিত হয় থানার মূল কার্যক্রম। অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা অভিযোগ এসব স্থানকে কেন্দ্র করেই। দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন সেবা প্রার্থীরা। পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কঠোর মনিটরিংয়ের পরও এসব স্থানে ঘটছে অপেশাদার অনাক্সিক্ষত ঘটনা। তাই এবার থানাগুলোকে আনা হচ্ছে রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায়। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ১৪টি জেলার ১০১টি থানায় এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
পরিকল্পনার আওতাধীন প্রকল্প ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, চারটি ফেরিঘাট এবং মহাসড়কের রোড জংশন, বিভিন্ন জাতীয় দিবস এবং ধর্মীয় উৎসবসহ বিভিন্ন কর্মসূচী আসবে অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারের আওতায়। ঢাকা রেঞ্জের ১৪ জেলার ১০১ থানায় চালু হয়েছে এই পরিকল্পনা। ঢাকা রেঞ্জের থানাগুলোতে চালু করা এই পরিকল্পনা পরীক্ষামূলকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পরীক্ষামূলক হিসাবে এটার সফলতার ওপর নির্ভর করবে দেশের প্রতিটি থানায় এই সিস্টেম চালুর বিষয়টি। তবে ঢাকা রেঞ্জের থানাগুলোতে এই পরিকল্পনা সফলতার সঙ্গে কার্যক্রম এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে দেশের সকল থানায়। রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনা অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারটি সার্বিক তত্ত্বাবধান করে যাচ্ছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
পরে কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা ॥ পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, রিমোট মনিটরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনা অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার প্রকল্পটি পরীক্ষামূলক। প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ছে। পর্যায়ক্রমে এই ব্যবস্থার কার্য পরিধি আরও বিস্তৃত করার উদ্যোগ নিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ॥ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের একজন কর্মকর্তা বলেন, থানার ডিউটি অফিসারের বিরুদ্ধে পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায়ই নানা ধরনের অভিযোগ আসে। কোন কোন সময় অভিযোগ আসে- আটক বা গ্রেফতারের পর হাজতখানায় আসামিদের নির্যাতন করা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিধান থাকলেও কয়েকদিন ধরে হাজতখানায় আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ আসে। খানাগুলোর সেন্ট্রির বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, দুর্ব্যবহার ও ক্ষেত্র বিশেষে আসামি বা তার স্বজনদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার অভিযোগ আসে।
কোন পুলিশ কর্মকর্তা যোগদানে ইচ্ছুক হলে ॥ পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, কোন থানার ওসি, সার্কেল এসপি বা জেলার এসপি যদি এ মনিটরিং কার্যক্রমে যোগ দিতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে ডিআইজি কার্যালয়ের অনুমতি নিতে হবে। পরে পুলিশ সদর দফতরে এই ধরনের পরিকল্পনা স্থাপন করা হলে অবশ্যই পুলিশের সদর দফতর থেকে অনুমতি নিতে হবে।
সেবা প্রার্থীদের জন্য করণীয় ॥ সেবা প্রত্যাশীদের জন্য ডিউটি অফিসারের কক্ষে চকোলেট, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর লেখা কার্ড এবং জিডির ফরম আছে কিনা তা নতুন সিস্টেমে ভালভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। সেবা প্রার্থীরা কত সময় থানায় বসে আছেন, সেবাপ্রার্থীদের প্রতি ডিউটি অফিসারের সাড়া কেমন, যথাযথ ড্রেসরুল অনুযায়ী অফিসার-ফোর্স-সেন্ট্রি ইউনিফর্মে আছেন কিনা, ডিউটি অফিসারের কক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আছে কিনা ইত্যাদি বিষয় মনিটরিং করা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম থেকে।
এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক নারী ও শিশুদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে কিনা, ডিউটি অফিসারের কক্ষে একই লোক বারবার আসছে কিনা, একসঙ্গে অনেক লোক আসছে কিনা, সেন্ট্রি দু’জন (একজন থানার মূল গেটে ও অন্যজন হাজতখানার সামনে) আছেন কিনা, সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে সেন্ট্রির আচরণ, সেন্ট্রি রাতে কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে ভেতরে বসে আছেন কিনা ইত্যাদি বিষয় মনিটরিং করা হয়।
প্রতিদিনের কার্যক্রম মনিটরিং ॥ মনিটরিং সেন্টার থেকে প্রতিদিন ভোরে এবং রাত ১০টার পর হাজতীদের বিষয়ে তথ্য নেয়া হয়। থানার হাজতখানায় কোন অস্বাভাবিক বিষয় দেখা যায় কিনা- নারী হাজতী থাকলে নারী সেন্ট্রি আছে কিনা, কোন হাজতীকে কোর্টে পাঠানো না হলে তা নোট রাখা, হাজতখানা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সেখানে শীতকালীন কম্বল আছে কিনা, হাজতখানায় আসামিদের আত্মীয়স্বজন খাবার দিচ্ছে কিনা, হাজতীর সঙ্গে অস্বাভাবিক উপকরণ (গামচা, রশি, শাড়ি, লুঙ্গি, মোবাইল ফোন) আছে কিনা, হাজতীদের আচরণ ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
আইজিপির পাঁচ মূলনীতি ॥ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেছেন, বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের ভিশন অনুযায়ী পুলিশই হবে জনগণের প্রথম ভরসার স্থল। তার পাঁচটি মূলনীতির মধ্যে তিনটি হলো- দুর্নীতিমুক্ত পুলিশী সেবা, নিপীড়ন ও হয়রানিমুক্ত পুলিশী সেবা এবং পুলিশের বৃহত্তর কল্যাণ, শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা বাস্তবায়ন। অপারেশন্স কন্ট্রোল এ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারের মাধ্যমেই এই তিনটি মূলনীতি পুরোপুরি মনিটরিং সম্ভব। প্রত্যেক থানার ৩০ দিনের ভিডিও রেকর্ড সংরক্ষিত থাকবে সেন্টারে। ক্যামেরাগুলোতে জুম ক্যাপাসিটি আছে। এর মাধ্যমে ছবি বা ভিডিওকে কাছে এনে বড় করে দেখা যায়। আমরা যে প্রযুক্তিটি চালু করেছি সেটি বাংলাদেশ পুলিশের আধুনিকায়নে বিস্ময়কর সাফল্য। পুলিশের সেবা দানের মূল কেন্দ্র হলো থানা। তাই পুলিশের সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে মনিটরিংয়ের বিকল্প নেই। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের সুনির্দিষ্ট ও কঠোর নিদের্শনা রয়েছে থানাগুলোতে আসা সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে ভদ্র ও সৌজন্যমূলক আচরণ করতে হবে। রিমোট মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমে এ বিষয়টিও নিশ্চিত করা যাবে বলে এমটাই এই ডিআইজি হাবিবুর রহমানের দাবি।