‘বাহে তোমাক হামি চিনি। কয়েক বছর আগে আসচিলেন। টিস্টোলে চা সিঙ্গার খাইতে খাইতে আমার সাথে কতা কইলেন। তোমরা সম্বাদিক (সাংবাদিক)। মোক চিনচেন বাহে। হামারগুলার এখন আর আগের মতো খারাপ অবস্থা নেই। ঘুরে দেখেন এই কয়েক বছরে দাসিয়ার ছড়ায় অনেক পরিবর্তন হইচে; মানুষের উন্নতি হইচে, শিক্ষিত হইচে’। কামালপুরের মো. বেলাল হোসেন আমাদের দেখেই দৃঢ়তা নিয়ে কথাগুলো বলেলেন। দাসিয়ার ছড়া ঘুরে মনে হলো সত্যিই উন্নতি হয়েছে। ৫ বছর পর দাসিয়ার ছড়ায় অনেক পরিবর্তন চোখে পড়লো। রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা, ইন্টারনেট, বিনে টাকায় বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক, নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা সবকিছুই হয়েছে। যেখানে শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষ ছিল নিরক্ষর; সেখানে এখন কম বয়সী সব ছেলেমেয়ে স্কুল, মাদরাসা পড়ছে। দাসিয়ার ছড়ার ওপর নতুন সেতু হয়েছে। প্রায় ৮ কিলোমিটার মূল রাস্তায় দু’ধারে ঔষুধি গাছ ‘বাসক’ অনেকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে।
৫ বছর আগে দাসিয়ার ছড়া গিয়েছিলাম। তখন মানুষের ছিল করুণ দশা। রাস্তা-ঘাট কিছুই ছিল না। ছিল না চিকিৎসাব্যবস্থা। কবিরাজের পানি পড়া খেয়ে রোগ সারাতেন। শহীদুল ইসলাম নামের একজন কৃষক পিঠের দাগ দেখিয়ে বলেছিলেন, হাটে লাউ বিক্রি করতে গিয়ে অর্ধেক দামে না দেয়ায় পিটিয়ে দাগ করে দিয়েছে। শিক্ষা বলে কিছুই ছিল না। উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারতেন না। রাস্তার বের হলেই বিদ্রুপ-নির্যাতন ছিল অবধারিত। সেই দাসিয়ার ছড়ায় প্রবেশ মুখেই চোখে পড়ল কয়েকজন মহিলা প্রচন্ড রোদে ঔষুধি বাসক গাছের পরিচর্যা করছেন। কামালপুরের মো. ওসমান আলীর স্ত্রী মোছা. খদেজা বেগম তাদের একজন। বললেন, দাসিয়ার ছড়ার মানুষ ৬ বছর আগেও ভারতের সিটমহলের বাসিন্দা ছিল। ঘর থেকে বের হলেই রাস্তায় ঝামেলায় পড়তে হতো। স্থানীয় হাট-বাজারে গেলে ঝামেলায় পড়তে হতো। লাউ কুমড়া বিক্রি করতে গেলে অর্ধেক দামে পণ্য না দিলে মারধোর করতো। নাগরিক সুবিধা বলে কিছুই ছিল না দাসিয়ার ছড়ার ১০ হাজার মানুষের। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ছিটমহল বিনিময়ের পর ৬ বছরে বদলে গেছে দাসিয়ার ছড়ার মানুষের জীবনচিত্র। এখন আমরা বাংলাদেশের বৈধ নাগরিক। রাষ্ট্র থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি। আগের চেয়ে উন্নত জীবনযাপন করছি।
২০১৫ সালে ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের পর কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে দাসিয়ার ছড়া। কুড়িগ্রাম শহর থেকে বাইক যোগে দাসিয়ার ছড়া যাই। সঙ্গে স্থানীয় সাংবাদিক। ফুলবাড়ি ছড়া নামের একটি বিল পেরিয়ে চোখ গেল দাসিয়ার ছড়ায়। কয়েক কিলোমিটার দূরের ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদীতে পানি না থাকায় দাসিয়ার ছড়া বিলও শুকিয়ে গেছে। মানুষের যাতায়াতের জন্য নতুন রাস্তা ও নতুন নির্মাণ করা ব্রীজ হয়েছে। এলাকায় ঢুকতেই চোখে পড়ল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে তৈরি বিশাল বিশাল চোখ ধাঁধানো ব্যানার। এলাকার মানুষ মনে করে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে তারা স্বাধীন দেশের প্রকৃত নাগরিক হতে পারতেন না।
দাসিয়ার ছড়া গ্রামে মূল রাস্তায় প্রবেশ করতেই চোখে পড়ল বিড়াট কুয়া। ইট-পাথর-বালু-সিমেন্ট দিয়ে খোদাই করা কুয়ার পানি আয়নার মতো স্বচ্ছ। নাম ‘জয়বাংলা ইন্দিরা’। ৮ কিলোমিটার রাস্তার দুই ধারে ঔষুধি ‘বাসক’ গাছ শোভা পাচ্ছে। বাসক গাছের কারণে রাস্তাটি দেখতে হয়েছে ছবির মতোই।
দিনভর দাসিয়ার ছড়ায় ঘুরে সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন নাগরিকদের পাওয়া না পাওয়ার অনেক অভিযোগ রয়েছে কারো কারো মধ্যে। তবে বাংলাদেশের নাগরিক হতে পেরে সবাই খুশি। ছিটমহল বিনিময়ের সময় ভারতে না গিয়ে তারা বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন সেটা এখন বুঝতে পারেন। মো. কাজিম উদ্দিন নামের এক কৃষক জানালেন, তার দুই ভাই এবং দুই বোন বিনিময়ের সময় লোভে পড়ে ভারতে চলে গেছেন। তিনি বৃদ্ধা মাকে নিয়ে রয়ে গেছেন। এখন ভারতে যাওয়া বোন-ভাইয়েরা পাসপোর্ট নিয়ে এসে কাঁন্নাকাটি করেন। তারা সেখানে খুব কষ্টে আছেন জানান। আবার দাসিয়ার ছড়ায় ফিরে আসতে চান।
দাসিয়ার ছড়ার প্রায় প্রতিটি ছোটবড় রাস্তায় বাইকে ঘুরেছি। চোখে পড়ল কালিরহাট সমন্বয়পাড়া সরকারি হাইস্কুল, বড় কামালপুর মইনুল হক উচ্চ বিদ্যালয়, বালাটারি উচ্চ বিদ্যালয়, কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালাটারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোটকামার বালিকা বিদ্যালয়, কালিরহাট সরকারি মাদরাসা, কালিরহাট ফজিলাতুন নেসা দাখিল মাদরাসা এবং ১৮টি মসজিদ। এর মধ্যে ৫টি মসজিদ সরকার নির্মাণ করে দিয়েছে। মো: জোনাব আলী নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানালেন, ছিটমহল বিনিময়ের পর প্রথম বছর কোটায় বেশ কিছু ছেলেকে সরকারি চাকরি দেয়া হয়েছে। এখনো অনেকের সরকারি চাকরি হয়েছে। নতুন নাগরিক হিসেবে সরকারি চাকরি পাওয়া যায় বুঝতে পেরে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও এখন স্কুল ও মাদরাসামুখি হচ্ছেন। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের ছেলেমেয়ের ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে গিয়ে লেখাপড়া করছেন, চাকরি বাকরি করছেন। যারা সেটা পারছেন না তারা রিকশা, সিএনজি চালিয়ে আয় রোজগার করছেন।
গ্রামে এসে পাকা ঘর তুলছেন। এভাবে চললে আগামী ২০ বছরে শিক্ষাদীক্ষা ও সরকারি চাকরিতে ফুলবাড়িয়ার অন্য ইউনিয়নকে ছাড়িয়ে যাবে দাসিয়ার ছড়া।
পথে কামালপুর বটতলা গ্রামের মো. আবদুল মজিদের পুত্র মো. আজাফ্ফরের সঙ্গে দেখা হলো। বললেন, ছিটমহল বিনিময়ের সময় ২০১৫ সালের ৩১ জুলাইয়ে এখান থেকে ৮৫৪ জন ভারতে চলে গেছেন। যারা গেছেন তারা এখনো শরণার্থী শিবিরে আছেন। ওখানে (ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিনহাটা) পরিবার পিছু মাসে ত্রিশ কেজি চাল দেয়া হয়। কিন্তু ভারত তাদের নাগরিক অধিকার দেয়নি। আমাদের আত্মীয়-স্বজন যারা গেছেন তারা পাসপোর্ট নিয়ে এসে ফিরে আসার জন্য কান্নাকাটি করেন।
একই গ্রামের মো. পলাশ শেখের পুত্র মো. বেলাল হোসেন বলেন, আমরা দারুণ খুশি। দাসিয়ার ছড়ায় দেখবেন অনেক পাকা বাড়ি। আগে খড়ের ঘর ছিল সেগুলো হয়েছে টিনের ঘর। যেখানে টিনের ঘর ছিল সেগুলো পাকা দালান হয়ে গেছে। বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। পানি খাওয়ার জন্য নলকুপ দেয়া হয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা নিয়মিত স্কুল ও মাদরাসায় যান। অথচ আমাকে বাপের নাম ঠিকানা গোপন করে ভুল ঠিকানা দিয়ে স্কুলে ভর্তি হতে হয়েছিল। এখন স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইন্টারনেট সংযোগও আছে। এখন মানুষ অনেক নিরাপদ বোধ করেন। দেখা হয় দরিদ্র কৃষক হরি কৃষ্ণ মোহান্তের সাথে। তার ভাই ও আত্মীয়-স্বজনরা সবাই ভারতে চলে গেলেও মোহান্ত পরিবার নিয়ে জন্মস্থান দাসিয়ার ছড়ায় থেকে যান। তার এই সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলে বলেন, মা মারা যাওয়ার আগে বলেছিলেন জন্মভ‚মি স্বর্গতুল্য। মায়ের কথার বাইরে যেতে পারিনি। বটতলা গ্রামের মো. হজরত আলী জানালেন, বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। নাগরিক হিসেবে স্মার্ট কার্ড দেয়া হয়েছে। তারপরও বিড়াট দুঃখ প্রকাশ করছি। কারণ এখনো জমি কেনাবেচায় রেজেষ্ট্রারি করা যায় না। দাসিয়ার ছড়ায় বর্তমানে ২১৭০ একর জমি রয়েছে। কেউ জমি বেচাকেনা করলে তা স্ট্র্যাম্পের ওপর চুক্তির মাধ্যমে করতে হয়। মো. হেদায়েত হোসেন নামের একজন বললেন, জন্মের পর থেকে ৫০ বছর নাগরিকত্ব পাইনি। ছিলাম দেশহীন। এখন নাগরিকত্ব পেয়ে খুশি। তবে আমরা চেয়েছিলাম বিলুপ্ত সিটমহল দাসিয়ার ছড়াকে একটি ইউনিয়ন করা হবে। কিন্তু দাসিয়ার ছড়া বাংলাদেশে আসায় তিন ভাগ করে ফুলবাড়ি উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। আমরা তো এখন ঐক্যবদ্ধ ভাবে ভোট দিয়ে পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারছি না। সরকার ভ‚মিহীনদের ৫ শতক করে জমি দিয়েছে। ভ‚মিজরিপ হয়েছে। তারপরও জমি কেনাবেচা করতে পারছি না।
ঘুরতে ঘুরতে শিমুলতলায় চোখে পড়ল রাস্তার পাশে ‘জয়বাংলা ইন্দিরা’ কুপ। ইট-পাথরের ইন্দিরায় পানি খুবই স্বচ্ছ। সেখানে খেলতে আসা ছেলেমেয়েরা জানান, আগে ছিটমহলে চিকিৎসাসেবা না থাকায় এই ইন্দিরার পানি রোগব্যাধি সারতে ব্যবহার হতো। অসুখে পড়লে মানুষ কুয়ার পানি খেয়ে ভালো হতেন। কবিরাজী ঔষুধ খেতেন। এখন আর মানুষের মধ্যে সে বিশ্বাস নেই। কারণ ৬ বছর আগেও ছিটমহলের মানুষ কোনো আধুনিক চিকিৎসার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন না।
বিলুপ্ত দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের অধিবাসী মোজাফফর হোসেন বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৬৮ বছরে আমাদের অবরুদ্ধ জীবনের অবসান ঘটেছে। মূল ভূখন্ডে যুক্ত হওয়ার ৬ বছরের মধ্যে বর্তমান সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, রাস্তা, সেতু-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ দাসিয়ার ছড়ায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে। আমরা কখনো কল্পনা করিনি সরকার এতো দ্রæত দাসিয়ার ছড়ায় উন্নয়ন করবে।
ফুলবাড়ির স্থানীয় সাংবাদিক এবং দাসিয়ার ছড়ার সুধীজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছিটমহল বিনিময়ের পর সরকার ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে কমিউনিটি রিসোর্স সেন্টার, ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫টি মসজিদ, ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মন্দির, ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু, আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের জন্য ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতল ডিজিটাল সার্ভিস ইমপ্লয়েন্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, একটি নিম্নমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি কলেজের একাডেমিক স্বীকৃতি এবং একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি দাখিল মাদরাসা জাতীয়করণ করেছে। আবার ভূমি জটিলতা নিরসন করছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ১ হাজার ৬৪৩ দশমিক ৪৪ একর ও সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ৯ একর জমির জরিপ শেষ করে খতিয়ান হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। দেয়া হয়েছে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ। ইউনিসেফের অর্থায়নে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি স্থাপন করেছে ১৫টি প্রাক প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র। এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে ১৪টি মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্র।
এখন দাসিয়ার ছড়া মূল আকর্ষণ শিমুলতলার জয় বাংলা ইন্দিরা আর রাস্তার দুধারে সারি সারি বাসক গাছ। ৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে বাড়ির আনাচে-কানাচে বাসকের চারা রোপণ করা হয়েছে। মোছা. শাহারানী জানালেন, প্রতি কেজি শুকনো বাসক পাতা ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে স্বপ্ন প্রকল্প নামে বাসক চাষ করা হচ্ছে। মূলত ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১৭ জন নারীকর্মী ১০ বছরের জন্য বাসক পাতা চাষের জন্য লিজ নিয়েছেন। এরা রাস্তা ছাড়াও বাড়ির আশেপাশে খোলা জায়গায় বাসক চাষ করে বাড়তি আয়ের উৎস খুঁজে পেয়েছেন। সড়কের ধারে ঔষুধি গাছ বাসকের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। ঔষুধি বাসক পাতা কিনে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন নামকরা ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালে এই বাসকের চাষ শুরু হয়। কথা হয় স্বপ্ন প্রকল্পের ইউনিয়ন ফেসিলেটর মোছা. হেলেনা খাতুনের সঙ্গে। তিনি জানান, চার মাস পরপর বাসকের কাঁচাপাতা সংগ্রহ ও গাছ পরিষ্কার করতে হয়। এরপর দু-তিন ঘণ্টা বিরতি দিয়ে ছায়াযুক্ত স্থাানে পাতা শুকাতে দিতে হয়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক গাছ থেকে তিন মাস পরপর চার কেজি কাঁচা পাতা পাওয়া যায়, যা শুকিয়ে হয় এক কেজি। বাসক বেশ কিছু পরিবারের অভাব দূর করেছে।
দসিয়ার ছড়া থেকে যখন ফিরি তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে। মসজিদে আছরের নামাজ পড়তে ছুটছেন ছেলে-বৃদ্ধরা। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে জানালেন, আমাদের দেশ ও ঠিকানা ছিল না। এখন বাংলাদেশ আমাদের ঠিকানা। ছিটমহল বিলুপ্তির পর ৬ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, দাসিয়ার ছড়ার মানুষকে সহায়তা করা হয়েছে; সেটা যেন অব্যাহত থাকে; সেটাই প্রত্যাশা করছি।