ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে বন্দী থাকাবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে মাতম চলছে। প্রতিবাদে সরব বিভিন্ন মহল। একইসঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলেরও দাবি উঠছে। এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ফের পর্যালোচনা করবে। একটি অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘লেখক মুশতাকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। প্রতিটি মৃত্যুই বেদনার। কারাগারে আটক থাকাবস্থায় মৃত্যু আরও বেদনার। আমি মর্মাহত।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে লেখক মুশতাকের মৃত্যুর কোন সম্পর্ক নেই। এখানে ডিজিটাল আইনের দোষটা কী? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে সাইবার ক্রাইম বন্ধ করার জন্য। এই আইনে যেসব অপরাধকে নির্ধারণ করা হয়েছে, তার প্রায় সবই আমাদের পেনাল কোডেও আছে। দুই-একটি বাদে। এই কারণে একটি এ্যাক্টকে আমি খারাপ বলতে পারি না।
তিনি বলেন, তার মৃত্যু তো ডিজিটাল আইনের কারণে হয়নি। তিনি জেলখানায় মারা গেছেন, এটি সত্য। যে কারণে আমিও মর্মাহত বলে শোক প্রকাশ করছি। অপরাধ করে থাকলে তার বিচার হবে। তাই না? এটুকুই তো বলতে পারি আমি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জামিন না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটিও তো আদালতের ব্যাপার। এখানে আমি আর কী বলব? মানুষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘কালা কানুন’ বলছে না। আপনাদের মতো কিছু কিছু মানুষ বলছে। যার যার জায়গা থেকে মতামত ব্যক্ত করতেই পারেন। তিনি প্রশ্ন করেন, সাংবাদিকরা কি সবাই দায়িত্বশীল? কোন কোন দায়িত্বহীন সাংবাদিকের কারণে তো আপনাদেরও বিপদে পড়তে হয়। আপনাদেরও তো সোচ্চার হওয়া দরকার।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের কোন ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আপনাকে একটা খবর দিই। তা হচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকার ফের পর্যালোচনা করবে। আমি ইতোমধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আবারও শীঘ্রই আলোচনায় বসব। শুধু সাইবার ক্রাইম কিভাবে বন্ধ করা যায়, তার ওপর জোর দিয়ে আইনের সংশোধন হতে পারে। আমি নিজেও তো সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়েছি। আপনি নিজেও হতে পারেন। তখন আমি আপনার সুরক্ষা দেব কোথা থেকে? আমি আবারও বলছি, এই আইনের যেন অপব্যবহার না করা হয়।