কৃষিতে সমৃদ্ধি, কৃষিতে শান্তি এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বান্দরবানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজ উদ্যোগে কৃষক কৃষাণীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বান্দরবানের পুলিশ সদস্য মেহেদী হাসান দোলন। মানবিক কৃষি নামে মাঠ পর্যায়ে অসহায় পরিশ্রমী কৃষকদের মাঝে বিনামুল্যে কৃষি উপকরন দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে। বেকার অলস কৃষকদেরকে উৎসাহ করতে কাজ করে যাচ্ছে নিজ কর্মের পাশাপাশি এবং বান্দরবানে যোগদানের পর থেকেই মানবিকতার টানে বান্দরবান সদরের ভরাখালী লেমুঝিড়ি, মুসলিম পাড়া,মিনঝিড়ি পাড়া,চড়–ই পাড়্া এলাকায় কৃষকদের মাঝে সার,বীজ,কৃষি উপকরন দিয়ে উদ্ভুদ্ধ করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে কৃষি তথ্য দিয়ে সহায়তা ও ভালো ফসল ফলাতে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে এই পুলিশ সদস্য।
শুধু তাই নয় প্রতিটি কৃষক পরিবারকে পরিবেশ ও প্রকৃতি সর্ম্পকে সচেতন করতে কয়েক বছর ধরে বিনামুল্যে বিভিন্ন ফলজ, বনজ, ও ঔষধি গাছের চারা বিতরন করার কার্যক্রম চালু রেখেছে। বেশী করে গাছের চারা লাগানোর জন্য সকলকে উৎসাহ প্রদান করার পাশাপাশি নিজে ও বিভিন্ন সড়কের পাশে গাছ লাগানোর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
জরুরী প্রয়োজনে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ,এ্যাম্বুলেন্স এর সেবা পেতে ৯৯৯ এর কার্যক্রম সর্ম্পকে জনগণকে সচেতন করার কার্যক্রম চালাচ্ছে এই দোলন। মানবতার ফেরিওয়ালা কৃষিপ্রেমী এই পুলিশ সদস্যের মানবিকতায় পাহাড়ের দূর্গম এলাকায় অসহায় পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও উন্নতমানের বীজ এবং সার দিয়ে কৃষিকাজে উদ্ভুদ্ধ করে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠছে অনেক পরিবারকে। নিজ চাকরি পাশপাশি কৃষি কাজ করে অন্যদের সুখে-সাচ্ছন্দে জীবন কাটানোর ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছে এই পুলিশ সদস্য।
এদিকে কৃষি কাজের পাশাপাশি মানবিক, সামাজিক ,পরিবেশ প্রকৃতি ও শিক্ষা নিয়ে ও কাজ করে যাচ্ছে বান্দরবানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অসহায় পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা সামগ্রী,স্কুল ড্রেসও অভিভাবকদের শিক্ষায় সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। অসহায় শিক্ষার্থী পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে শিক্ষা সামগ্রী হিসেবে খাতা, কলম, পেন্সিল, ইত্যাদি পৌছেঁ দিচ্ছে যথারীতি।
বান্দরবান সদরের মুসলিম পাড়ার কৃষানী ভুলু বেগম জানান, এক সময় আমরা খুব অভাব অনটনে দিন কাটাতাম, কিন্তু আজ পুলিশ ভাই দোলনের সহযোগীতায় আমরা কৃষি কাজ করে এখন সুখে আছি।
ভরাখালীর কৃষক তৌহিদ জানান, আমি পরের জমিতে চাষ করে ও সার কীটনাশক খরচ করে তেমন লাভবান হতাম না , কিন্তু পুলিশ ভাই দোলনের সহায়তায় আমি শীতকালীন সবজি, ভুট্টা, ধান করে অনেক লাভবান হচ্ছি,আমি আমার ছেলেমেয়ে নিয়ে অনেক সুখে শান্তিতে বসবাস করছি।
দেলনের এমন মহানুভবতায় বান্দরবান সদরের শাহানা বেগম, সৈয়দ আহম্মদ,বাহাদুর মিয়া, ভুলু বেগমসহ অনেকের জীবন এখন পাল্টে গেছে মানবিক কৃষিতে।
বান্দরবান সদরের কৃষি কর্মকর্তা সুব্রত দাশ বলেন, এমন মানবিক পুলিশ আগে কখনো আমি বান্দরবানে দেখি নাই,বেতনের টাকা দিয়ে অসহায় কৃষি পরিবারগুলোকে কৃষি সহায়তা দিয়ে মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছে মেহেদি হাসান দোলন, তার ব্যাঁপক উৎসাহ ও সহায়তা পেয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেক কৃষক পরিবার।
পুলিশের সদস্য মেহেদী হাসান দোলন জানান, বেতন থেকে জমানো কিছু টাকা দিয়ে মানবিকতার টানে কাজ করে যাচ্ছি। চাকুরীতে যোগদানের পর হইতে বান্দরবানের ৫২টি অসহায় পরিবারকে কৃষি সহায়তা দিয়ে স্বাবলম্বী করতে ও কর্মউদ্যাগী করতে কাজ করে যাচ্ছি। পুলিশ সদস্য দোলন আরো বলেন, আমি মনে করি কৃষিতেই সুখ,কৃষিতেই সকল উন্নতির সূচক নিহিত,তাই আমি অসহায় পরিবার ও বেকার যুবকদেরকে কৃষি কাজের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে কাজ করে যাচ্ছি। মানবিক কৃষি সহায়তার দিয়ে ১১জন বেকার যুবক বিভিন্ন ফল গাছের বাগান, কলা বাগান ও পাহাড়ের ঢালে আগাম সবজি করে নিজে স্বাবলম্বী হচ্ছে এবং পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করে যাচ্ছে।