দীর্ঘদিন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ব্যস্ত বিএনপি নেতারা। বিভিন্ন কর্মসূচির কথা বললেও শক্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি তারা। এমন প্রেক্ষাপটে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আইনজীবীদের গাফিলতির কথা শোনা গেলেও এবার তা তাদের ঘাড়ে রীতিমতো দোষ হিসেবে চেপে বসেছে।
গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপি নেতা ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামালের সঙ্গে তার চেম্বারের কনিষ্ঠ আইনজীবীর আতিকুর রহমানের স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে সেই অভিযোগ নতুন করে আলোচনায় এসেছে। অনেকেই বলছেন, খালেদার আইনজীবীদের যখন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে জোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত তখন তারা পরকীয়া নিয়ে ব্যস্ত। যা প্রমাণ করে, খালেদার জামিন নিয়ে তাদের কোনো মনোযোগ নেই তারা এখন ব্যস্ত পরকীয়ায়!
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের একজন সদস্য বলেন, কায়সার কামালের এমন ঘটনা আমাদের জন্য সত্যিই লজ্জার। আমরা দলীয় নেত্রীর জামিন নিয়ে দৌড়-ঝাপ করতে করতে ফ্রি সময় পাচ্ছি না, আর সে একজন পদধারী নেতা হয়েও অধস্তন আইনজীবীর স্ত্রীকে নিয়ে যা করলো তাতে আমাদের ইমেজ সংকটে ফেলেছে। এরকম গুটিকয়েক ব্যক্তির জন্য বিএনপি তথা এর অঙ্গসংগঠনগুলো বারবার বিতর্কের মধ্যে পড়ছে। যা সত্যিই লজ্জার।
এদিকে পরকীয়া, আন্তকোন্দল, কমিটি নিয়ে সংঘাত, মতের অমিলের কারণে বেগম জিয়ার মামলা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা- এমন অভিযোগ আইনজীবী মহলের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। আলোচনা উঠেছে, এসব করেই সময় তারা পায় না, জামিন করাবে কখন?
খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের নিয়ে সৃষ্ট সমালোচনা ও কায়সার কামালের প্রশ্নবিদ্ধ চারিত্রিক অবস্থান প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সিনিয়র আইনজীবী মওদুদ আহমেদ বলেন, একটি দল বা সংগঠনে নানা ধরণের লোকজন থাকে। নেত্রীর আইনজীবীদের মধ্যেও নানা চরিত্রের লোক আছে। তাবলে সবাই একরকম তা তো নয়। তবে একজন আইনজীবীর কাছ থেকে আমরা যে ধরণের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আশা করি তা কায়সার কামালের মধ্যে অনুপস্থিত বিষয়টা টের পেলাম। এই ঘটনাকে সামনে রেখে আমি অন্যদের সাবধান করতে চাই। সবাইকে একটা কথাই বলবো- আসুন এসব বাদ দিয়ে নেত্রীর মুক্তিতে সোচ্চার হই।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে স্কয়ার হাসপাতালের সামনে আতিকুর রহমান তার স্ত্রীকে কায়সার কামালের গাড়িতে উঠতে দেখে। আতিকুর এগিয়ে গিয়ে কারণ জানতে চাইলে কায়সারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কায়সারকে থানায় নিয়ে আসে। এই ঘটনায় কায়সারের বিরুদ্ধে আতিকুর প্রতারণার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় মামলা করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে স্ত্রীর সঙ্গে কায়সারের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন আতিকুর।