গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ৭ সন্ত্রাসীর ফাঁসি প্রদানে বিশ্বমিডিয়ায় প্রশংসায় ভাসছে বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন পত্রিকা, সোশ্যাল মিডিয়া এবং দেশের বাইরে সিএনএন, বিবিসি, আলজাজিরা সহ সকল নিউজ পত্রিকায় ফলাও করে এ খবর প্রচার করা হয়। সেইসাথে সন্ত্রাসবাদ দমনে বিভিন্ন বিদেশী মিডিয়া বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।
একইসাথে সন্ত্রাসবাদ দমনে জিরো টলারেন্স ও হলি আর্টিজানের পর জোরালো পদক্ষেপ নেয়ায় বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে ৬ ধাপ উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর ইকোনোমিকস অ্যন্ড পিস প্রকাশিত ‘গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স’ বা বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে (আইইপি) ৮২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৩১তম।
তবে সব দেশেই কমেছে এমন নয়, কিছু দেশে বৃদ্ধিও পেয়েছে। তালিকায় সবার উপরে আছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান এবং সবার নীচে আছে সিঙ্গাপুর, কিউবাসহ ২৬টি দেশ।আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকলেও ভারত এক ধাপ পিছিয়েছে। গত ১৬ বছরে এই অঞ্চলে মাত্র দুটি দেশে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে, দেশ দুটি হচ্ছে নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। ২০০৪ ও ২০০৬ এ ছাড়া আইএসআইর তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
প্রতিবেদনে আরো বলা হচ্ছে, হলি আর্টিজান হামলার পর ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল নিয়ে বাংলাদেশকে নতুন করে ভাবতে হয়েছিল। হলি আর্টিজানের হামলায় ৭ জাপানি ও ইতালির নাগরিক নিহত হওয়ার পর প্রথম ছয়মাস ব্যবসায় সেক্টরে সেই হামলার বেশ প্রভাব পড়েছিল। যা দেশটিকে একপ্রান্তে ঠেলে দেয়।
হলি আর্টিজান হামলার তিন বছরে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ দমনে নানা পদক্ষেপ নেয়। সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে। দ্রুত পরিবর্তনশীল দেশের সামগ্রিক অবস্থাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় বাংলাদেশ দারুণভাবে এই লড়াই চালিয়েছে। যার ফলে সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক সূচকে দেশটির এমন উন্নতি।
প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ২০১৭ সালে যে আটটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন হামলা চালিয়েছিল তার মধ্যে পাঁচটিই ২০১৮ সালে। বাংলাদেশে কোনো হামলা চালাতে পারেনি তারা।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে তুলনামূলক সন্ত্রাসী তৎপরতা কমেছে। গত বছর বাংলাদেশে মোট ৩১টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে, যাতে প্রাণ হারান ৭ জন। ২০১৭ সালের তুলনায় গত বছর সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা কমেছে ৭০ শতাংশ। এতে হলি আর্টিজান হামলার পর সরকারের নেয়া পদক্ষেপের উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে সন্ত্রাসী হামলায় আগের বছরের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২ ভাগ কমে গেছে।