দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্বের ২০ মাস পার হলেও তার মুক্তি বিষয়ে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বিএনপি। কার্যকর আন্দোলন গড়ে নেত্রীকে মুক্ত না করতে পারার জন্য দলটির দায়িত্বশীল নেতারা একে অপরকে দায়ী করছেন বলে জানা গেছে।
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতার মতে, এভাবে চলতে থাকলে দলের কারাবন্দী চেয়ারপারসনকে মুক্ত করাটা সম্ভব হবে না। তাকে মুক্ত করতে না পারলে তার দায়ভার বিএনপিকেই নিতে হবে।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫০২ জন। এরমধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়েছেন ১৯ জন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ৭৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৩৫ জন এবং যুগ্ম মহাসচিব ৭ জন। যাদের পদ আছে তাদের দায়িত্ব আন্দোলন কর্মসূচিতে থাকা। কিন্তু পদে থাকার পরও নানা অজুহাতে তারা চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নেন না। যারা কর্মসূচিতে আসেন না তাদের অভিযোগ তাদেরকে দপ্তর থেকে কিছু জানানো হয় না। এটা কোনো অভিযোগ হতে পারে না। যেহেতু দল এখন বিরোধী দলেও নেই সেহেতু নেতাদের উচিত কার্যালয়মুখী হওয়া। নেতারা কার্যালয়মুখী হন না।
তিনি আরো বলেন, দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলন করে বক্তব্য রাখেন। সেখানে নিয়মিত কিছু নেতা যান। বাকিরা যান না। তাদের অভিযোগ, তাদের ডাকা হয় না। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমান উল্লাহ আমান ’৯০- এর ডাকসুর ব্যানারে আলাদা কর্মসূচি ঘোষণা করে তা পালন করেন। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করলে কারাবন্দী চেয়ারপারসনের মুক্তি আদায় করা সম্ভব হবে না।
এদিকে পৃথক কর্মসূচি পালনের বিষয়ে জানতে আমান উল্লাহ আমানের মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি। তবে আমানের ঘনিষ্ঠজনরা বলেন, দপ্তর-সংশ্লিষ্ট নেতারা কর্মসূচির বিষয়ে কোনো কিছু জানান না। তাই ভাই কর্মসূচিতে যান না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে। তিনি সেখানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরপরও আমরা তার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি দিচ্ছি না। আবার বলছি, আমরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত। যদি আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থেকেই থাকি তাহলে কেন রাজপথে নামছি না। আর কবে আমরা রাজপথে নামবো?