বগুড়ার সার্বিক উন্নয়নে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজের আহ্বানে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে সোচ্চার হয়েছে বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। সিরাজ দলমত নির্বিশেষে বগুড়ার উন্নয়নের কথা বললেও তা মানতে পারছেন না বিএনপির হাইকমান্ড। সারা দেশ যখন সরকার বিরোধী প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে তখন সিরাজের এমন কাণ্ডে ভীত বিএনপি নেতারা।
এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকারের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে বিএনপির ঘাঁটি বলে খ্যাত এই অঞ্চলটি আওয়ামী লীগের হাতে তুলে দিতেই সিরাজ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও আড়ালে এমন সমালোচনা চললেও এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বিএনপির কোনো নেতাই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে চান না।
সূত্র বলছে, মঙ্গলবার বগুড়া প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়ে গোলাম মো. সিরাজ বলেন, বগুড়া উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র। শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ব্যবসায়, বাণিজ্য, চিকিৎসাসহ সব ক্ষেত্রেই অগ্রসর। কিন্তু ২০০৬ সালের পর থেকে বগুড়া শহরে দৃশ্যমান তেমন অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। তাই বগুড়া শহরের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ, যানজট নিরসনে শহরের ভেতর থেকে রেললাইন বাইরে স্থানান্তর, বগুড়া পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীতকরণ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সংযোগ সড়ক, করতোয়া নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম উন্নয়ন, চেলোপাড়া ব্রিজ প্রশস্তকরণসহ বেশকিছু উন্নয়ন প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, এই কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে হলে আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও এখানে প্রয়োজন। আমরা সবাই মিলে এক হয়ে এই কাজ সম্পন্ন করতে চাই।
সিরাজের এমন বক্তব্য নিয়ে ওঠা সমালোচনার প্রেক্ষিতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির প্রথম সারির একজন নেতা বলেন, বিষয়টি সন্দেহজনক। কেননা, একটি এলাকার সংসদ সদস্য হয়ে তিনি হঠাৎ আওয়ামী লীগের মতো বিরোধী দলের নেতাদের নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছেন তা মোটেই সহজ করে দেখার বিষয় নয়। তিনি হঠাৎ করেই এমন সিদ্ধান্ত দিলেন, অথচ এ বিষয়ে দলের কেউ কিছু জানেনই না। এতে বিএনপির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হতে পারে কিনা সে বিষয়েও একবারও তিনি ভাবেননি। ফলে একে ষড়যন্ত্র না বলে থাকার উপায় নেই।