মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। মানবিক সংকটে বিশাল এক জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে মিয়ানমারে তাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সচেষ্ট রয়েছে। মিয়ানমার সর্বশেষ ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তারিখ ঠিক করেও অজুহাতের কৌশলকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াকে পিছিয়ে দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ জোরপূর্বক কোনো রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে চায়নি। যার কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আবারো নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু না হওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে মিথ্যাচারে নেমেছে বিএনপি। দলটির নেতারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে কোনো সমাধানের পথ না দেখিয়ে নানা উসকানিমূলক গুজব ছড়াচ্ছেন। তারা দাবি করেছেন, সরকারের ব্যর্থতায় রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিএনপির এমন মিথ্যাচারে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে বিএনপির মনগড়া মিথ্যাচারের কঠোর সমালোচনা করেছেন সাবেক কূটনীতিকরা। তাদের মতে, সরকারকে বিব্রত করতে বিএনপি সঙ্গবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্রে মেতেছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচারের কঠোর সমালোচনা করে সাবেক কূটনীতিক এম হুমায়ূন কবীর বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের জন্য বাংলাদেশ জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের পাশে রয়েছে চীন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তিগুলো। তারাও রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ২২ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল বাংলাদেশ। অথচ এখানেও লুকোচুরি করেছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের কোনো দাবি মানতে রাজি নয় দেশটি। যার কারণে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে সাহস পায়নি রোহিঙ্গারা। কারণ, সেখানে গিয়ে অধিকারহীন থাকলে সেই জীবন হবে আরেক ধরণের উদ্বাস্তু জীবন। সেই বিষয়টি অনুধাবন করে বাংলাদেশ সরকার জোর করে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠায়নি। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের মানবিক অধিকারের বিষয়ে সচেতন। অথচ আজকে বাংলাদেশের উদারতা ও মানবিকতা নিয়ে নানা উসকানিমূলক মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে বিএনপি। যা কাম্য নয়।