ঈদে যাত্রায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পর থেকে সাবধান


সিএইচটি টাইমস অনলাইন প্রকাশের সময় :৩১ জুলাই, ২০১৯ ৪:২৪ : অপরাহ্ণ 533 Views

বছরজুড়ে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা হাতেগোনা। কিন্তু নানা ধরনের আইনী তৎপরতার মধ্যেও তারা বরাবরই বেপরোয়া হয়ে উঠে ঈদ এলেই। এ যেন তাদেরও মোক্ষম সুযোগ। ঈদকে কেন্দ্র করে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেপরোয়া হয়ে পড়ে। বিশেষ করে কোরবানীর ঈদে তাদের তৎপরতা লক্ষ্য করার মতো। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে শিকার ধরার জন্য। শিকার শেষেই তারা ঘরে ফেরে। তাদের হাতে জানমাল সর্বস্ব খুইয়ে যাওয়ার ঘটনাও বাড়ছে দেশের আনাচে-কানাচে।
ঈদুল-আজহাকে সামনে রেখে রাজধানীতে অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এসব চক্রের খপ্পর থেকে বাঁচতে বেশকিছু সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়েছে ডিএমপি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা সাধারণত ঈদ বা জাতীয় কোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে তৎপর হয়ে ওঠে। তারা এতটাই ধূর্ত যে তাদের দেখে চেনার উপায় নেই। বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহনে তারা ছদ্মবেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। টার্গেটকৃত ব্যক্তির সঙ্গে ভাব জমিয়ে যেকোনো খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেয় নেশা জাতীয় ট্যাবলেট। যাত্রী অজ্ঞান হয়ে গেলে সর্বস্ব লুটে নিয়ে সুবিধামত স্থানে সটকে পড়ে।
অনেক সময় অজ্ঞান ব্যক্তির মোবাইল দিয়ে তার নিকট আত্মীয়ের কাছে ফোন করে তাকে আটক রাখার কথা বলে বিকাশ বা অন্য কোন মাধ্যমে আরো নগদ টাকা দাবি করে। এ চক্রের সঙ্গে মহিলা সদস্যও রয়েছে। অনেক সময় তারা স্বামী-স্ত্রী সেজেও যানবাহনে ওঠে।
ঈদ যাত্রায় এসব চক্রের খপ্পর থেকে বাঁচতে ঢাকা মহানগর পুলিশের পরামর্শগুলো হলো:
১. ভ্রমণ পথে অপরিচিত কেউ অহেতুক ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করলে তাকে পাত্তা না দেয়া।
২. পাশের সিটের লোকটিই আপনার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে চাইবে এবং এক সময় নিচের থেকে খাবার (কেক, চিপস, কোমল পানীয়, কাটা পেয়ারা বা আনারস ইত্যাদি) কিনে সেও খাবে আপনাকেও খেতে বলবে। ভুলেও সেই খাবার না খাওয়া।
৩. ফুটপাতে বা রাস্তার মোড়ে টং দোকান থেকে খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা।
৪. ফেরিওয়ালা বা ভ্রাম্যমাণ কারো কাছ থেকে আচার, আমড়া, শসা, পেয়ারা প্রভৃতি না খাওয়া।
৫. বাসে, ট্রেনে বা লঞ্চে ভ্রমণের সময় চকলেট, আইসক্রিম, সিগারেট জাতীয় কোনো খাবার না নেয়া। আজকাল ডাবের ভেতরে আগে থেকেই সিরিঞ্জের মাধ্যমে চেতনা-নাশক ওষুধ মেশানো থাকতে পারে। তাই কখন কোথা হতে তৃষ্ণা নিবারণ করছেন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা।
৬. প্রয়োজনে যাত্রাপথে হালকা নাস্তার জন্য বাড়ি থেকে সংগৃহীত খাবার বা পানীয় সঙ্গে রাখা অথবা স্থায়ী দোকান থেকে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করা।
৭. সিএনজিতে চলার সময় যাত্রীরা ড্রাইভারের কাছ থেকে এবং ড্রাইভাররা যাত্রীদের কাছ থেকে কোন খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা।
৮. যাত্রাপথে নগদ অর্থ বা যেকোনো মূল্যবান দ্রব্য নিরাপদ হেফাজতে রাখা।
৯. ভ্রমণের সময় পরিচিত কাউকে সঙ্গে রাখার চেষ্টা করা।
১০. যাত্রাপথে পাশের কোনো যাত্রী অসুস্থ হলে তাৎক্ষনিকভাবে যানবাহন পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতায় নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। আপনার একটু সহযোগিতাই পারে বড় একটা দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে।
১১. যাত্রাপথে কোনো ব্যক্তির আচার ব্যবহার সন্দেহজনক হলে নিকটস্থ পুলিশকে অবহিত করা।
শুধু একটু সচেতনতাই রক্ষা করতে পারে আপনার জীবন ও সম্পদ। যে কোন বিপদে ন্যাশনাল হেল্প লাইন ৯৯৯ এর সাহায্য নিন। আপনার নিরাপদ ঈদ যাত্রাই আমাদের কাম্য।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!