ত্রিদেশীয় সিরিজে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে খেলেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের লিগে দুই ম্যাচ ও ফাইনালে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে পুরো শক্তিশালী উইন্ডিজই খেললো মাশরাফি মুর্তজাদের বিপক্ষে। কিন্তু আবারও সেই একই পরিণতি। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের দুরন্ত ব্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ উইকেটে হারালো বাংলাদেশ। ৫১ বল বাকি থাকতেই জিতেছে তারা।
ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে চার মেরে রানের খাতা খোলেন তামিম ইকবাল। পরের ওভারে সৌম্য সরকারও বাউন্ডারি মারেন। বেশ সতর্ক হয়ে খেলছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। কিন্তু ৫২ রানে ভেঙে যায় উদ্বোধনী জুটি।
আন্দ্রে রাসেল তার দ্বিতীয় ওভারে সৌম্যকে ফেরান। এই ওপেনার ২৩ বলে দুটি করে চার ও ছয় মেরে ২৯ রানে স্লিপে ধরা পড়েন ক্রিস গেইলের হাতে।
সাকিব মাঠে নেমে তামিমের সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির দেখা পেতে গিয়েও ব্যর্থ হলেন তামিম। মাত্র ২ রানের জন্য ফিফটি হয়নি তার। শেলডন কট্রেলের থ্রো থেকে রান আউট হন বাংলাদেশি ওপেনার। ৫৩ বলে ৬টি চারে ৪৮ রানে বিদায় নেন তিনি।
কট্রেলের বলটি সোজা মেরেই দৌড় দিতে চেয়েছিলেন তামিম। কিন্তু ক্যারিবিয়ান পেসার বল হাতে নিতেই ফিরে যান তিনি। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পৌঁছানোর আগেই স্টাম্প ভেঙে যায়। তার সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ার পথে ৬ হাজার ওয়ানডে রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব।
তামিম ফিরে যাওয়ার পর বাংলাদেশের আরও একটি উইকেটের পতন হয়। পরের ওভারে ওশানে থমাসের লেগ সাইডে করা বলটি মুশফিকুর রহিমের ব্যাট ছুঁয়ে শাই হোপের গ্লাভসে ধরা পড়ে। ৫ বল খেলে মাত্র ১ রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
মুশফিকের বিদায়ে খুব বেশি ক্ষতি হয়নি বাংলাদেশের। টানা চতুর্থ ম্যাচে পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংস খেলেন সাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪০ বলে ৭টি চারে ফিফটি করেন তিনি। এখানেই থেমে যাননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
যদিও ২৩তম ওভারে ৫৫ রানে জীবন পান সাকিব। শাই হোপ ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ভুলে আউট হননি তিনি। এরপর লিটন দাসকে নিয়ে বোলারদের ওপর আরও চড়াও হন তিনি। হাফসেঞ্চুরিকে শতক বানান তিনি ৮৩তম বলে। ১৩টি বাউন্ডারিতে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন সাকিব। তাকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন লিটন। মোহাম্মদ মিঠুনের জায়গায় ডাক পেয়ে তিনি ৪৩ বলে ফিফটি করেন।
দুজনের ১৮৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৪১.৩ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে তারা করে ৩২২ রান। সাকিব ৯৯ বলে ১৬ চারে ১২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৮ চার ও ৪ ছয়ে ৯৪ রানে খেলছিলেন লিটন, তার ইনিংস ছিল ৬৯ বলের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শাই হোপের ইনিংস সেরা পারফরম্যান্সের সঙ্গে এভিন লুইস ও শিমরন হেটমায়ারের হাফসেঞ্চুরিতে তিনশ ছাড়ায় উইন্ডিজ। বিশ্বকাপ দুই দলের পঞ্চম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩২২ রানের লক্ষ্য দেয় ক্যারিবিয়ানরা। ৮ উইকেটে ৩২১ রান করে তারা।
লুইসের ৭০ রানের পর হেটমায়ার ঝড়ো হাফসেঞ্চুরি করেন। ২৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। হোপ ইনিংস সেরা ৯৬ রানে মাঠ ছাড়েন। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।