কেন্দ্রয় বিএনপির মতো নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতেও শুরু হয়েছে বিশৃঙ্খলা। আর এই বিশৃঙ্খলায় দায়ী করা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির দুই নেতাকে। বিশৃঙ্খলার পেছনে ওই দুইজন নেতাকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রে চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
নেতাদের অভিযোগ, মহানগর বিএনপির রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিভেদ তৈরিতে এ দুই নেতা প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
সূত্র বলছে, ওই দুই নেতার একজন হলেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বহুল আলোচিত ও সমালোচিত নেতা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল ও আরেকজন সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান।
সূত্রের খবরে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ৩০ মে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধেও বিষোদ্গার করেছেন মুকুল। তিনি মির্জা ফখরুলকে দালাল বলে অভিহিত করে বলেছেন, আমাদের মধ্যে দালাল ঢুকে গেছে। আমাদের দলের মহাসচিবই সরকারের দালালী করছেন। এই দালালী আমরা দেখতে চাই না। আমরা সৎ লোকের রাজনীতি চাই। দালাল দিয়ে বিএনপি চলবে না।
এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে আতাউর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে। মুকুলের বিরুদ্ধে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এস এম আকরামের অভিযোগ, নির্বাচনের দিন মুকুল বিএনপির ভোটারদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন। আর তার প্রতিদান হিসেবে আতাউর রহমান মুকুল চেয়েছিলেন এবারের বন্দর উপজেলা নির্বাচনে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার টিকে থাকা হয়নি।
এদিকে আতাউর রহমান মুকুলের এই বিতর্কিত ভূমিকার কারণে গত ১৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাদের নিয়ে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের সাথে সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান তর্ক বিতর্কে জড়ান। সাখাওয়াত হোসেন খান সভাপতি আবুল কালামের বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টির সাথে সম্পৃক্ততা, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিষ্ক্রিয়তা ও দলীয় কর্মসূচিতে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ তোলা হয়। কিন্তু সেখানে আবুল কালাম নিজেই মুকুলের পক্ষ অবলম্বন করেন। এমন একাধিক ঘটনার প্রেক্ষিতে মহানগর বিএনপির নেতারা মুকুল-সাখাওয়াতের ওপর চরম বিরক্ত হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম বলেন, নানাভাবে মহানগর বিএনপিকে ভাঙতে এই দুই নেতা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। সংগঠনের অভ্যন্তরে এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি ও শীর্ষ নেতাদের নিয়েও নানা প্রকার অপ্রীতিকর মন্তব্য করেছেন তারা। এতে জনমানুষের কাছে বিএনপির অবস্থান আরো তলানিতে পৌঁছাচ্ছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন্দ্রে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। চিঠিতে তাদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ উল্লেখ করা হবে।