বিভিন্ন ইস্যুতে নির্বাচন কেন্দ্রিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অভ্যন্তরে সৃষ্ট মতবিরোধ ঘোচাতে সোমবার (১০ জুন) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টার ওই বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা।
এমনকি কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই ঐক্যফ্রন্টের এমপিদের শপথ গ্রহণসহ নানান ইস্যুতে শরিকদের প্রশ্নের সদুত্তর বিএনপি দিতে পারেনি বলেও জানা গেছে।
সূত্র বলছে, বৈঠকে নিজেদের মধ্যে ঐক্য অটুট রাখা, আগামী দিনে আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের পাশাপাশি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর আল্টিমেটামের বিষয়টির সুরাহা হওয়ার কথা ছিলো। কাদের সিদ্দিকী সংসদ সদস্য হিসেবে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সাতজন শপথ নেওয়ায় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। ৮ জুন এই আল্টিমেটামের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরও আরও দুই দিন সময় দেন কাদের সিদ্দিকী।
এদিকে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ কয়েকজন নেতা কাউকে অবগত না করেই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে অনেকেই একে কৌশল বলে মনে করছেন। অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্টে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ড. কামালসহ অন্যান্য নেতারাও অবগত ছিলেন বলে একটি সন্দেহ দানা বেঁধেছে ঐক্যফ্রন্টে। অনেক নেতাই বলছেন, বিএনপির কৌশলের সঙ্গে ড. কামালসহ অনেক নেতাই জড়িত বলে গুঞ্জন উঠেছে। আর তাই কামালরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
এমন প্রেক্ষাপটে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোনো প্রকার কারণ জানানো ছাড়াই বৈঠকে কয়েকজন নেতা উপস্থিত হলেন না। এমন গা-ছাড়া মনোভাব মোটেই ভালো দেখায় না। তবে তাদের একত্রিত করতে হবে। আবার বৈঠক ডাকা হবে। অসঙ্গতির বিষয়ে সদুত্তর দিতেই হবে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের। কৌশল করুক আর যাই করুক, যারা ফ্রন্টে অসঙ্গতি ডেকে এনে ফায়দা লুটেছে তাদেরকে কৈফিয়ত দিতেই হবে।
আরেকটি সূত্র বলছে, বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের অসঙ্গতির বিষয়গুলো আলোচনায় আসলেও ‘অনেক নেতাই উপস্থিত নেই’- এই অজুহাতে প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন আলোচনায় ফ্রন্টে সৃষ্ট অসঙ্গতি ও নেতাদের দায়িত্ব-জ্ঞানহীনতার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশ নেতাই ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে নেতাদের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের জবাবদিহিতার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।