দুই কিলোমিটার দৃশ্যমান পদ্মা সেতুর


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৬ মে, ২০১৯ ৯:১৪ : অপরাহ্ণ 569 Views

দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ। চলতি বছর উদ্বোধনের কথা মাথায় রেখে এগিয়ে নেয়া হয়েছে নির্মাণ কাজ। আগে যেখানে মাসে একটা করে স্প্যান বসতো, সেখানে বসছে দুইটি করে। আর একে একে দৃশ্যমান হতে শুরু করে এই পদ্মা সেতু। এদিকে প্রতিকূলতা কাটিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষে পদ্মা সেতুর ত্রয়োদশ স্প্যান ‘৩বি’ সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারের উপর বসানো হয়েছে। এতে সেতুর প্রায় ২ কিলোমিটার (১৯৫০ মিটার) দৃশ্যমান হয়েছে। শনিবার সকালে স্প্যানটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারের ওপর দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সফলভাবে বসানো হয়েছে।

জানা গেছে, স্প্যানটি বসেছে দু’দিনের চেষ্টায় ও নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করতে হয়েছে কয়েকবার। দ্বাদশ স্প্যান (অস্থায়ী) বসানোর ১৯ দিনের মাথায় স্থায়ীভাবে বসানো হলো এই ত্রয়োদশ স্প্যানটি। এভাবে একের পর এক স্প্যান বসিয়ে দৈর্ঘ্য বেড়ে চলছে সেতুর। গাড়ি ও ট্রেনে চড়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার স্বপ্ন এখন ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নেওয়ার পথে।

পদ্মা সেতুর উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর গণমাধ্যমকে জানান, আর মাত্র ২৮টি স্প্যান বসলেই সম্পূর্ণ হবে পদ্মা সেতুর সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ। সে লক্ষ্যে তৃতীয় মডিউলের দুই নম্বর স্প্যানটি আজ (শনিবার) বসানো সম্পন্ন হলো।
তিনি বলেন, স্প্যানটি শুক্রবার বসানোর কথা থাকলেও নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় স্প্যানবাহী ক্রেনটি শুক্রবার সকাল ৮টায় চালু করা সম্ভব হয়নি। ৩ ঘণ্টা দেরিতে স্প্যান নিয়ে সেটি নির্ধারিত দুই পিলারের দিকে রওয়ানা দেয়। দুপুরে ২টার সময় ক্রেনটি নোঙ্গর করা হলেও স্প্যান বসানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে ছিল না। এতে কাজ স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
এদিকে নিজ দফতরে সেতু বিভাগের চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ক সভায় ওবায়দুল কাদের জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল সেতুর অগ্রগতি ৭৬ ভাগ, নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ৫৫ ভাগ, সংযোগ সড়কের অগ্রগতি ১০০ ভাগ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৭ ভাগ।

মন্ত্রী বলেন, মূল সেতুর নদীর মধ্যে ২৬২টি পাইলের মধ্যে ২৩৬টির কাজ শেষ হয়েছে এবং অবশিষ্ট ২৬টি পাইলের কাজ জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হবে। মূল সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ২৫টির কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে, জুন মাসের মধ্যে আরও ৬টি পিলারের কাজ শেষ হবে এবং বাকি ১১টির কাজ চলমান। মোট স্প্যান ৪১টি।

সেতু বিশেষজ্ঞরা জানান, এই সেতু উদ্বোধনে ফলে দেশের এক প্রান্তের মানুষ বহু উপকৃত হবে। যা তারা আগে স্বপ্লেও ভেবে দেখেনি। বর্তমানে দেশের দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চল অর্থাৎ যশোর ও তার আশেপাশের এলাকায় যেতে সময় লাগে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। দূরত্ব কম হলেও বিশাল পদ্মা নদীর কারণে ঘুরে যেতে হয় অনেকটা পথ। আর সেতু হয়ে গেলে ঢাকা থেকে যশোর যেতে সময় নেবে মাত্র ৪ ঘণ্টা। আর এতে করে ওই এলাকার স্থানীয়দের ঘুচে যাবে গ্লানি। এদিকে সেতুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং (এমবিইসি) সূত্র জানায়, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পদ্মা সেতু গড়তে তাদের সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ করতে হয়েছে পদ্মার তলদেশে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!