ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ শুরু আগামী ৩০ মে। তার আগে ২৪ মে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি পর্ব। এই পর্বে প্রতিটি দল দুইটি করে ম্যাচ খেলবে।
প্রস্তুতি পর্বে বাংলাদেশ আগামীকাল (রবিবার) নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে। কার্ডিফে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে তিনটায়।
এর আগে পাকিস্তান তাদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটে হেরেছে। কার্ডিফে বাংলাদেশের পরবর্তী প্রস্তুতি ম্যাচ আগামী ২৮ মে, ভারতের বিপক্ষে।
এই বিশ্বকাপে অভিজ্ঞতায় সবচেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। দলে আছেন সিনিয়র এমন পাঁচ ক্রিকেটার যারা প্রত্যেকেই দশ বছরের বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পার করে দিয়েছেন।
মাশরাফি মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিম খেলতে যাচ্ছেন চতুর্থ বিশ্বকাপ। মাহমুদউল্লাহ খেলবেন তার তৃতীয় বিশ্বকাপে। এই পাঁচজনই যে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশনের মূল চালিকাশক্তি হতে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ওপেনিং জুটি নিয়ে মধুর সমস্যা তৈরি হয়েছে। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের জায়গা তো নিশ্চিত। এখন তার সঙ্গী কে হবেন সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে, সম্প্রতি ত্রিদেশীয় সিরিজে ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গে সৌম্য সরকার এবং লিটন দাস দুজনই ভালো করেছেন।
দুজনের মধ্যে কাকে খেলানো হবে এখন সেটিই দেখার বিষয়। তামিম-সৌম্য গড় ৪৪.৬১। অন্যদিকে তামিম-লিটন গড় ২৮। তাই সৌম্যই এগিয়ে থাকছেন।
আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজের জাত চিনিয়ে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করেছেন এই বা-হাতি স্ট্রোকমেকার । স্কোয়াডে রয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের ভিড় ।
টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল খান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের অভিজ্ঞতা সর্বজন স্বীকৃত।
তাদের প্রত্যকেরই একাধিকবার বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। মিডল অর্ডারে খেলবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
সম্ভাব্য সেরাদের নিয়েই সাজানো হয়েছে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ । অন্যদলের তুলনায় বাংলাদেশ পেস আক্রমণকে বলা যায় বেশ গড়পড়তা। অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে রসদ বের করে মাশরাফি তার শেষ বিশ্বকাপে বড় কিছু করতে চাইবেন।
রুবেল হোসেন গতি, শর্ট বল আর রিভার্স স্যুয়িং করানোর সামর্থ্য দিয়ে প্রভাব ফেলতে পারেন। কিন্তু সবচেয়ে বেশি যাকে নিয়ে আশা সেই মোস্তাফিজুর রহমান কেমন করবেন তা নিয়ে আছে সংশয়। ইংলিশ কন্ডিশনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ছিলেন সাদামাটা।
কারণ তার বল গ্রিপ করাতে যেমন উইকেট দরকার ইংল্যান্ডে শুরুর দিকে তা থাকবে না। কাজেই মোস্তাফিজের কাটার ভোঁতা হওয়ার শঙ্কা থেকেই যায়। তাকে হয়ত উইকেট নেওয়ার চেয়ে রান আটকানোতে বেশি মন দিতে দেখা যেতে পারে।
যতটুকুই কার্যকর হোন, ফিজের বিকল্প বাংলাদেশের ক্রিকেটে নেই।
পেস অলরাউন্ডার হিসেবে শুরু করলেও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বোলিং এখন আগে চেয়ে বেশি ধারালো। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তাকে আউটসুইং করাতে দেখা গেছে। বিশ্বকাপেও তিনি তা করতে পারলে বাংলাদেশের জন্য হবে বিশাল পাওয়া। সেই সঙ্গে শেষ দিকে তার ব্যাটিং তো বাড়তি পাওনা।
চোট সেরে নেমে পুরো ছন্দ দেখাতে না পারলেও তাসকিন আহমেদ ছিলেন আলোচনায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা পেসার আবু জায়েদ রাহিকে বেছে নিয়েছেন নির্বাচকরা।
রাহি এগিয়ে গিয়েছেন কন্ডিশনের কারণে। দুই দিকে বল সুইং করানোর সহজাত সামর্থ্য আছে তার। ইংলিশ কন্ডিশনে রাহীর স্যুয়িং কাজে লাগাতে চায় দল। তবে নির্বাচকদের কথা ম্যাচ ফিটনেস থাকলে হয়ত তাসকিনই পেতেন জায়গা।
মূল স্পিনার হিসেবে সাকিবের সঙ্গে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ইংল্যান্ডের কন্ডিশন যাই থাকুক, বাংলাদেশের বোলিংয়ে তাদের থাকবে বড় ভূমিকা।
বাংলাদেশ স্কোয়াড: মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ মিথুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আবু জায়েদ রাহি।
পাকিস্তান স্কোয়াড: সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক), বাবর আজম, আসিফ আলী, ফখর জামান, হারিস সোহেল, হাসান আলী, ইমাদ ওয়াসিম, ইমাম-উল-হক, মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ হাফিজ, মোহাম্মদ হাসনাইন, শাদব খান, শাহীন আফ্রিদি, শোয়েব মালিক, ওয়াহাব রিয়াজ।