২০ দলীয় জোটের ভাঙন শুরু হয়েছে। এমনকি ভাঙন ধরেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও। একদিকে ২০ দলের শরিকরা জোট ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা, অন্যদিকে সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অসংগতি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে জোটের প্রতি অনাস্থা দেখাচ্ছেন ফ্রন্টের নেতারা। এমন অবস্থায় কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়েছে বিএনপি।
৯ মে দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে দলের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, নির্বাচন পরবর্তী পর্যায়ে ঐক্যফ্রন্টকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়নি। বিশেষ করে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করার পর কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই সাতজন শপথ নিয়েছেন। যা জোটের শরিকদের জন্য লজ্জা ও অসম্মানজনক। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ঐক্যফ্রন্ট পরিচালনায় কেনো দুর্বলতা? সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত কেনো নেওয়া যাচ্ছে না? আগামী এক মাসের মধ্যে যে যে অসংগতি আছে তা সঠিকভাবে নিরসন করা না হলে ৮ জুন ঐক্যফ্রন্ট থেকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করবে। জোটের অন্য শরিকরাও এ জোট থেকে বের হতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অসংগতি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মান্নার ঘনিষ্ঠ একজন নেতা জানান, ড. কামাল হোসেনের কাণ্ড-জ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না মান্না। ড. কামাল ঐক্যফ্রন্টকে ছেড়ে নিজ দল গণফোরামকে নিয়ে যেভাবে মেতে উঠেছেন তা তামাশা ছাড়া আর কিছু না। তামাশা চলতে থাকলে ঐক্যফ্রন্টকে কোনভাবেই টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এতে ড. কামালের তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও ক্ষতির মুখে পড়বে ঐক্যের আর সব নেতারা।
সূত্র বলছে, কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্য মূলত মান্নাসহ ঐক্যের অন্যান্য নেতাদের একীভূত সিদ্ধান্তের বহিঃপ্রকাশ। নাগরিক ঐক্যের একটি সূত্র জানায়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্থির অবস্থা দূর করতে খুব সহসাই জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক ডাকা হবে। ওই বৈঠকেই ফয়সালা করা হবে বর্তমান বাস্তবতায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? এছাড়া বিএনপির সাথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে বিরোধ সেটা নিয়েও চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হবে বলে জানা গেছে। মাহমুদুর রহমান মান্না বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ সঙ্গে কথা বলেছেন। দু’একদিনের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব এবং কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সাথেও কথা বলবেন মান্না। তবে মান্না তার ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন, পর্দার অন্তরাল থেকে খেলা চলছে- এ খেলায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কয়েকটি রাজনৈতিক দল হাবুডুবু খাচ্ছে।