১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভোলায় সেতু নির্মাণ করছে সরকার


ভোলা প্রতিনিধি প্রকাশের সময় :৮ মে, ২০১৯ ২:০০ : অপরাহ্ণ 596 Views

দ্বীপ জেলা ভোলাকে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের আওতায় আনতে কালাবদর ও তেঁতুলিয়া নদীর ওপর দুটি সেতু নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য একটি প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (পিডিপিপি) তৈরি করেছে সেতু বিভাগ। এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কালাবদর ও তেঁতুলিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণে ২০১৭ সালে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। ৫৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় কাজটি করছে ভারতের এসটিইউপি কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড, যুক্তরাষ্ট্রের সিওডব্লিউই কনসাল্টিং এবং বাংলাদেশী ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্ট ও ডেবকনসালট্যান্ট লিমিটেড (ডেবকন)। চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
‘কনস্ট্রাকশন অব ভোলা ব্রিজ অন বরিশাল-ভোলা রোড ওভার দ্য রিভার তেতুলিয়া অ্যান্ড কালাবদর’ শীর্ষক প্রকল্পটির জন্য চীন, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) ও বিশ্বব্যাংকসহ যেকোনো উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে সিংহভাগ অর্থপ্রাপ্তির আশা করছে সেতু বিভাগ। প্রকল্পের জন্য অর্থ সহায়তা চেয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন সংস্থাকে চিঠিও দিয়েছে ইআরডি। এর মধ্যে গত ২ জানুয়ারি ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এএফডি), ৯ ফেব্রুয়ারি জাপানের অফিস অব ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (ওডিএ) ও ১০ ফেব্রুয়ারি এডিবির কাছে চিঠি দেয়া হয়। এর আগে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সড়ক পরিবহন উইং থেকে এ প্রকল্পে বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ইআরডিকে অনুরোধ করে ভৌত অবকাঠামো বিভাগ।
প্রকল্পের প্রাথমিক উন্নয়ন প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বরিশাল থেকে ৭ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি তেঁতুলিয়া নদীর ওপর মধ্যবর্তী একটি চরে গিয়ে শেষ হবে। এরপর ওই চর থেকে আরেকটি ১ দশমিক শূন্য ৬৪ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সেতু ভোলার সঙ্গে সংযুক্ত হবে। প্রকল্পের সময়সীমা ধরা হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৮ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চার লেনের সেতুটি নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও ১০ হাজার ২৮১ কোটি টাকা সহযোগী উন্নয়ন সংস্থার কাছ থেকে সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রকল্পের ৮ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার সেতুর মধ্যে ১ দশমিক শূন্য ৬৪ কিলোমিটার সংযোগ সেতু, ২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও ৪ কিলোমিটার নদী শাসনের কাজ রয়েছে। সেতু নির্মাণে ৪৮৬ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১২৬ কোটি টাকা। এছাড়া সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা।
প্রকল্প পরিচালক মো. তোফাজ্জল হোসাইন এ বিষয়ে বলেন, ভোলা জেলাকে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুমোদন হয়েছে। বৈদেশিক সাহায্যের জন্য প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। দুটি নদীতে সেতু নির্মাণের মাধ্যমে ভোলাকে বরিশালের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন পাওয়া গেলে সর্বমোট ব্যয় কিংবা সেতুর দৈর্ঘ্য কত হবে, সেসব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে জানা যাবে।
এদিকে সেতু বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বৈদেশিক সাহায্য সংগ্রহে প্রাথমিক প্রস্তাবে সেতু নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি চূড়ান্ত নয়। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেতুর নকশাসহ বিভিন্ন দিক ও প্রস্তাব উঠে আসবে। তখন সেতু নির্মাণে প্রকল্পের ব্যয় আরো বাড়তে পারে। বিদেশী দাতা সংস্থা এ প্রকল্পে এগিয়ে এলে প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তাবের চেয়েও বেশি খরচে সেতু দুটি নির্মাণে সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন তারা।
তেঁতুলিয়া ও কালাবদর দিয়ে বরিশাল থেকে ভোলার দূরত্ব সবচেয়ে কম। এ কারণে নদী দুটির ওপরই সেতু নির্মাণ করা হবে। এ সেতু নির্মাণ হলে দ্বীপজেলা ভোলা দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হবে। এর ফলে সড়কপথে সরাসরি ভোলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!