বিএনপির দণ্ডিত নেত্রী বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে কেন্দ্রের ‘ধীরে চলো নীতির’ কঠোর সমালোচনায় মেতেছেন দলটির তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। নেত্রীর মুক্তি প্রসঙ্গে তৃণমূল বিএনপির নানা চাপে পিষ্ট হচ্ছেন কেন্দ্রের নেতারা।
কঠোর আন্দোলন গড়ে না তুলে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ মৃদু কূটনৈতিক তৎপরতা এবং সাধারণ নাগরিক কর্মসূচি পালনেই ক্ষান্ত থাকায় তৃণমূলে বাড়ছে ক্ষোভ। তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, কারো দয়া-দাক্ষিণ্য বা নির্দেশনায় নয় বরং সাংগঠনিক শক্তি প্রয়োগ করে সরকারকে বেগম জিয়ার মুক্তিতে বাধ্য করাতে রাজপথে নামার পরিকল্পনা থাকলেও কেন্দ্রের কারণে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারছে না তৃণমূল বিএনপি। তাই সময়ের সাথে সাথে কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব ও দূরত্ব দুটোই বাড়ছে। দ্বন্দ্ব ও দূরত্ব বাড়তে থাকলে হতাশা ও ক্ষোভ থেকে গণ-পদত্যাগ এবং গণ-বিদ্রোহের আশঙ্কাও করছেন তারা।
বিএনপির একাধিক জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একান্ত অলাপকালে অভিযোগ ও ক্ষোভের বিষয়টি সম্পর্কে জানা গেছে।
বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলন নিয়ে তৃণমূলে কেন্দ্রের প্রতি ক্ষোভ তীব্রতর হচ্ছে বলে মনে করেন গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন। মিলন বলেন, জেলার প্রতিটি ইউনিট, প্রতিটি উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে মত দিচ্ছেন। তাদের মতে, নাগরিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা বাদ দিয়ে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন ছাড়া বেগম জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। তৃণমূলে গুঞ্জন উঠেছে, কেন্দ্রের কয়েকজন সিনিয়র নেতার অপারদর্শিতা এবং স্বদিচ্ছার অভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অচিরেই দলের ভীতু এবং ধীরে চলা আদর্শে বিশ্বাসী নেতাদের বাদ দিয়ে তরুণ নেতাদের দায়িত্ব না দিলে সার্বিক অসন্তোষের কারণে সম্ভাব্য গণ-পদত্যাগ ও গণ-বিদ্রোহের ঘটনার শঙ্কাকেও এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। অচিরেই বিএনপিকে স্বরূপে ফেরাতে সক্ষম না হলে গণ-অসন্তোষ চরম রূপ নিতে পারে।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে রংপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রইছ আহাম্মেদ বলেন, নেত্রীর মুক্তির ইস্যুতে সিদ্ধান্তহীনতা এবং আন্দোলন বিমুখতায় তৃণমূলে ক্ষোভ বাড়ছে প্রতিক্ষণ। এছাড়া উপজেলা নির্বাচনের বহিষ্কৃতরাও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন উসকানি দিচ্ছে বলেও খবর পেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিএনপির জায়গা রাজপথে হওয়া উচিত। অথচ তার বদলে নয়াপল্টন ও মানববন্ধনে অভিযোগ ও বিচার চেয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন কেন্দ্রের নেতারা। এসব ভুলে কঠোর আন্দোলনে ঝাঁপ দিতে হবে, না হলে পরিস্থিতি বিগড়ে গেলে কেন্দ্রকে এর দায়ভার নিতে হবে।