সারাদেশের বোর্ড পরীক্ষাগুলোতে ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ফাঁসের গুঞ্জন রোধে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। বিগত সময়ে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর পাশাপাশি এবারও নানামুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা। এতে এবারের এইচএসসি পরীক্ষাতেও গ্রেফতার হচ্ছে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতারকৃতরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া প্রচারণা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
শিক্ষাবিদদের মতে, কেবল প্রশাসন নয়; পরীক্ষায় নকল কিংবা প্রশ্ন ফাঁস রোধে প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষার প্রসার। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ সবার মানসিকতা পরিবর্তনে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দেন তারা। পাশাপাশি সৎ ও নিষ্ঠাবান লোকদেরকে এ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত করার ব্যাপারেও মত দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসএসসি, এইচএসসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা পরীক্ষার কিছু আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের এসব ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মকর্তার পাশাপাশি শিক্ষকরাও। সরকারের জোর প্রচেষ্টায় তা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতে, অর্থের লোভে এক শ্রেণির প্রতারক ও দালাল চক্র ভুয়া প্রশ্ন বানিয়েও প্রশ্নপত্র ফাঁসের দাবি করে। এই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা শিক্ষার্থীদের কাছে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। বিগত সময় এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর ছিলো, এখনও আছে। মাঠ-পর্যায়ে নজরদারি রাখায় চক্রের সদস্যরা গ্রেফতার হচ্ছে।
এদিকে শিক্ষাবিদরা বলছেন, নকল কিংবা প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। কখনো কখনো পরীক্ষায় সন্তানকে বেশি নম্বর পাইয়ে দেয়ার আশায় প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে অভিভাবকরাও এই ফাঁদে জড়িয়ে পড়েন। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তারা।
প্রসঙ্গত, এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্যদের তৎপরতা কিছুটা কম লক্ষ্য করা গেলেও এ পর্যন্ত অন্তত এই চক্রের ৭ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।