বিএনপির বেশির ভাগ নেতা ও জোটের শরিকের অনেকেই খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গণ-অনশন কর্মসূচির বিরোধিতা করেছেন। তারা বলেছেন, এমন গণ-অনশন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। নেতাদের মধ্যে বিরাজমান অনৈক্য দূর করে সঠিক কর্ম পরিকল্পনা ঠিক না করতে পারলে দল ও দলীয় নেত্রীর মুক্তি সম্ভব নয়। এসব কর্মসূচিতে যদি বিএনপির নেতা-কর্মীরা মরেও যান, তবু মুক্তি মিলবে না।
রোববার (৭ এপ্রিল) ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করে দলটি। কর্মসূচিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলের নেতারাও অংশ নেন। অনুষ্ঠানের অধিকাংশ নেতারাই গণ-অনশনসহ দলীয় বিভিন্ন স্থূল কর্মসূচি নিয়ে তাচ্ছিল্যসূচক বক্তব্য রাখেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এর আগেও বেশ কয়েকবার অনশন, প্রতীকী গণ-অনশনের মতো কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। বিগত সময়ের মতো এবারের কর্মসূচিতেও নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা। অনেকে অভিযোগ করে বলেছেন, অনেক নেতা-কর্মী চেহারা দেখিয়ে দু-একবার স্লোগান দিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। এমন ধরনের নেতা-কর্মী থাকলে কোনো কর্মসূচি দিয়ে কাজ হবে না।
এ ছাড়া বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সকাল থেকে অনুষ্ঠিত গণ-অনশন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকলেও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ কর্মসূচিতে উপস্থিত হন বেলা ৩টা ০৫ মিনিটে। দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আবদুল মঈন খান কর্মসূচিতে এসে পৌঁছান দুপুর আড়াইটার পর। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাসও দুপুর দুইটার পর গণ-অনশনে যোগ দেন।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অনেক বিএনপি নেতা আন্দোলনের পক্ষে নয়। কর্মসূচি দিলে দেরি করে আসেন। যেন সরকারি কর্মকর্তা। তারা কিভাবে আন্দোলন করবে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে- এ ধরণের নেতাদের সংখ্যা দলে দিন দিন বেড়েই চলেছে।
দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছে কর্মসূচি চেয়ে বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব মুজিবুর রহমান সারোয়ার বলেন, ২০ দলীয় জোটের কাছে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানাই। নাহলে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা দুষ্কর হয়ে পড়বে। মাহমুদুর রহমান মান্না, ড. কামাল নয়, আমরা ঐক্যফ্রন্টের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন আশা করছি। না হলে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা কাদের সিদ্দিকী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হলের ভেতরে গণ-অনশন করে ১০০ বছরেও খালেদা জিয়াকে বের করা যাবে না। যদি এরকমই হয় তবে আপনাদের পতন অনিবার্য।
জেএসডির সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘ঘরের মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইতে রাজি নই। এখানে ১ হাজার ১০০ জন লোক মারা গেলেও কিছু হবে না।