প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে সাক্ষাৎ করতে চান জিয়া পরিবারের সদস্যরা। ইতিমধ্যে সাক্ষাত আবেদনের একটি খসড়াও তারা চূড়ান্ত করেছেন। খসড়াটি তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের দিয়ে সংশোধন করা হচ্ছে। খসড়া চূড়ান্ত হলে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
এ প্রসঙ্গে বেগম জিয়ার একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় জানান, ‘বেগম জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমরা হাতজোড় করে ক্ষমা চাইবো। এই সাক্ষাতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানবিক আবেদনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ বিষয়ক ওই আবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবগতির জন্য বেগম জিয়ার দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরেছে। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রধান রাজনৈতিক দলের দুই নেত্রী অর্থাৎ আপনারা দুই নেত্রীই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দুজনই নির্যাতন ভোগ করেছেন। তাই আপনার আন্দোলনের সহযাত্রীর প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি কামনা করছি।’ আবেদনে বলা হয়েছে, ‘বেগম জিয়া দীর্ঘদিন নির্জন কারাবাসের কারণে শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছেন। তিনি এখন হাঁটাচলা করতে পারছেন না। তার হাত ক্রমশ অবশ হয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্ষুধা-মন্দায় ভুগছেন। তার সুচিকিৎসা এখন অতীব প্রয়োজন। কারান্তরীণ অবস্থায় তার সুচিকিৎসা সম্ভব নয়, বিধায় তার সাময়িক মুক্তি প্রয়োজন।’
জানা গেছে, চিঠিতে ‘হয়রানিমূলক এবং মিথ্যা মামলায় বন্দী’ সংক্রান্ত কিছু কথা ছিলো, কিন্তু বেগম জিয়ার একজন আইনজীবী মানবিক আবেদন সংক্রান্ত চিঠিতে এ ধরনের বক্তব্য না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে বিতর্ক তৈরি হতে পারে- এমন কোনো বক্তব্য যেন আবেদনে না থাকে সেটাও নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন ওই আইনজীবী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, মানবিক আবেদনটি শুধু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেওয়া হবে নাকি পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এ নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। কিন্তু বিএনপি মহাসচিবই পরামর্শ দিয়েছেন যে, ‘ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ’ হলে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির গুরুত্ব বুঝবেন। তাছাড়া ক্ষমা চাইতে হলে সাক্ষাৎ বিষয়টি অবশ্যই প্রয়োজন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর একটি মানবিক হৃদয় আছে। তিনি যদি সত্যি বোঝেন যে, বেগম জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তাহলে হয়তো বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’ বেগম জিয়ার একজন আত্মীয়ও মনে করছেন, ‘বেগম জিয়ার অসুস্থতার গভীরতা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত হয়তো পোঁছাচ্ছে না। আমরা যতদূর জানি, প্রধানমন্ত্রীর একটি মানবিক হৃদয় আছে, তিনি মানুষের কষ্ট বোঝেন। এজন্যই বিষয়টি সরাসরি তাঁর গোচরে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’