দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে ফের তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রুহুল আমিনকে আগামী ৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে নয়টায় সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। এদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রুহুল আমিনকে দুদক তলব করায় জাতীয় পার্টিসহ বিএনপির নেতাদের মধ্যে ভয়-ভীতি ভর করেছে বলে জানা গেছে। দুদকের তলব ও সম্ভাব্য অভিযানের খবরে দুর্নীতিবাজ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটকারী রাজনীতিবিদরা আতঙ্কিত হয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দুদক সূত্র বলছে, রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ ও শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জাতীয় পার্টিসহ বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দুদক। যেকোন দিন এসব দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যেতে পারে দুদক বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছে। এদিকে দুদকের এমন তলব ও অভিযানের বিষয়ে জানতে পেরে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির চিহ্নিত একাধিক দুর্নীতিবাজ নেতারা আত্মগোপন করেছেন। অনেকের মোবাইল ফোন বন্ধও পাওয়া গেছে। তবে দুদক তাদের অপকর্মের জন্য ছাড় দেবে না বলে প্রতিজ্ঞা করেছে।
রুহুল আমিন হাওলাদার ও অন্যান্য দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
তিনি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রুহুল আমিন হাওলাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ করা এসব ধোঁকাবাজ রাজনীতিবিদদের আইনের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে সমাজে উদহারণ সৃষ্টি করা যেতে পারে। এতে অন্তত সাধারণ মানুষের মাঝে দুর্নীতি করার প্রবণতা কমবে।
এদিকে দুর্নীতির বিষয়ে দুদকের তলব ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ বিষয়ে জানতে রুহুল আমিন হাওলাদারকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এছাড়া বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস ও ব্যারিস্টার মওদুদকে এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। দুদকের হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং ভুয়া সম্মান রক্ষার্থে এসব নেতারা আত্মগোপন করেছেন বলে মনে করছেন রাজনীতি সচেতনরা।