২৬শে মার্চ সকালে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন তারেক রহমান। তিনি সবাইকে বলেছেন, ‘আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন। দেশে ফিরছি, রেডি থাকুন। আমি দেশে ফেরার ঘোষণা দেব ১২ই এপ্রিল।
তিনি বলেছেন, শুধুমাত্র আমার দেশে ফেরার মাধ্যমে সারাদেশে যেন গণজাগরণ হয় সেটার প্রস্তুতি নিন এবং দলকে শক্তিশালী করুন। তারেক রহমানের এই টেলিফোন বার্তায় অনেকে অবাক হয়েছেন, অনেকে হতবাকও হয়েছেন। এসময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানতে চেয়েছেন যে, ‘সত্যি দেশে ফিরবেন নাকি এটা স্রেফ একটা বাহানা?’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, তখন তারেক বলেছেন, ‘আমি দেশেই ফিরবো। ১২ই এপ্রিল বিষয়টি বুঝতে পারবেন।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বিএনপির যে সমস্ত নেতার সঙ্গে তারেক রহমান দেশে ফেরার বিষয় আলোচনা করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ধারণা করা হচ্ছে যে, বিএনপিতে যে সাংগঠনকিভাবে কোন্দল মতবিরোধ এবং দলের তৃণমূলের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে সেই হতাশা কাটানোর জন্য এবং দলের কোন্দল মেটানোর জন্য তারেক আকস্মিকভাবে দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কূটনৈতিক সূত্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলছেন, তারেক এই মুহূর্তে চাইলেও দেশে ফিরতে পারবে না। কারণ তিনি পাসপোর্ট ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টে জমা দিয়েছেন। ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট তার পাসপোর্ট বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠিয়েছে এবং পাসপোর্টটির মেয়াদউত্তীর্ণ হয়েছে। তারেক রহমান বর্তমানে রাজনৈতিক আশ্রয়ে লন্ডনে অবস্থান করেছেন। তবে ব্রিটিশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, যেকোনো রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্ত ব্যক্তি যদি দেশে ফিরতে চান সেক্ষেত্রে পাসপোর্টের প্রয়োজন হয় না। একটি পারমিট পাস দিয়ে তাকে দেশে ফেরানো যায়।
উল্লেখ্য, তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তিনটি লিখিত আবেদন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে এবং হোম ডিপার্টমেন্ট সেটা তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ তারেককে দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি সেটি হলো, তারেকের সঙ্গে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে সরকার যে অভিযোগ করেছে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট তারেক রহমানকে একটি লিখিত নোটিশ দিয়েছিল। যে নোটিশে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ নব্বই দিনের মধ্যে খণ্ডাতে হবে। আগামী ১৫ জুনের মধ্যে তারেককে এই নোটিশের জবাব দিতে হবে। ফলে কোনোভাবেই তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারবেন না মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।