দিন দিন বিএনপির প্রতি ক্ষোভ বাড়ছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। এবার খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের রাস্তায় বসে মোনাজাত করার মতো কটাক্ষ করেছেন জাফরুল্লাহ।
৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে ক্ষোভের সঙ্গে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট, গুলশান কার্যালয় ও প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে ভিক্ষুকের মতো খালেদা জিয়ার মুক্তি চান বিএনপির নেতারা। খারাপ লাগে না আপনাদের! আপনারা নেতা না ভিক্ষুক? একেক জন নেতা বাক্যবাণে হাতি-ঘোড়া মারেন। রাজপথে নামার কথা শুনলে শরীর খারাপ, কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বিএনপির নেতারা ইচ্ছা করে খালেদা জিয়াকে জেলখানায় রাখতে চান। কারণ তিনি মুক্ত হলে তো কমিটির মনোনয়ন দেয়ার নামে লুটপাট করা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, সভা-সেমিনার ও কথার বাণ ছুঁড়ে বেগম জিয়ার মুক্তি আসবে না। এর জন্য রাস্তায় নামতে হবে। গোলটেবিল বৈঠক করে কোনো লাভ হবে না। বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আমার প্রচণ্ড হাসি পায়। মওদুদ সাহেব যদি জেলে থাকতেন তাহলে কিন্তু ঠিকই আট-দশটা ব্যারিস্টার-উকিলের মাধ্যমে বের হয়ে আসতেন। অথচ বেগম জিয়ার ব্যাপারে মওদুদ সাহেবদের গড়িমসি আমাকে ব্যথিত করেছে। আমার মনে হয়, বিএনপি নেতারা শুধু এখন মোনাজাতেই বেগম জিয়ার মুক্তি চান।
তারেক রহমানের সমালোচনা করে জাফরুল্লাহ বলেন, আপনি লন্ডনে বসে স্কাইপে কথা বলবেন ঠিক আছে, তবে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বসেন। তা না হলে ভুল-ভ্রান্তি হবে। রিজভীর মাধ্যমে মিটিং না করে সিনিয়র নেতাদের ডাকেন। আপনি আরেকজন রিজভী হয়ে যাবেন না। ঐক্যফ্রন্ট বিএনপিকে নতুন জীবন দিয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট না হলে তারা রাস্তায় বের হতে পারতো না। সুতরাং ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিএনপি নেতাদের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
এদিকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, দেখুন আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি আদায় করতে চাই। সেজন্য ম্যাডাম জিয়ার মুক্তি পেতে একটু সময় লাগছে। আমি মনে করি, ম্যাডামের মুক্তি আন্দোলন করে খুব বেশি লাভ হবে না। ভিক্ষা করে মুক্তি পাওয়ার চেয়ে বেগম জিয়ার কারাগারে থাকাটা অনেক সম্মানের। ম্যাডাম না থাকলেও বিএনপি কিন্তু ঠিকই চলছে। আর জাফরুল্লাহ সাহেবের কথায় কান দিয়ে কোনো লাভ নেই। কারণ তিনি কখন কী বলেন তার ঠিক নেই। আর তিনি তো বিএনপির কেউ নন। সুতরাং বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে তার মন্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত। বিএনপি কোনো ব্যক্তির মতামতে চলে না। ডা. জাফরুল্লাহর এমন মন্তব্য বিএনপির জন্য অসম্মানের। তিনি প্রতিবারই এমন আজে-বাজে মন্তব্য করে বিএনপিকে বদনাম করার চেষ্টা করেন। বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়।