বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রী প্রানসা সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আরো ৪০ পরিবার অনুপ্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। এ নিয়ে সীমান্তের চাইক্ষাং পাড়ায় এখন শরণার্থীর সংখ্যা দাড়ালো ২০৩ জনে। শরণার্থীরা সীমান্তের ওই পাড়ায় খোলা জায়গায় ত্রিপল টেনে তাবুর মতো করে বসবাস করছেন। তীব্র শীতে শরণার্থীদের শিশু ও বৃদ্ধরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। আশপাশ এলাকার পাড়াগুলো থেকে খাদ্য দিয়ে সহায়তা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে সীমান্তে শরণার্থীদের পরিস্থিতি পর্যক্ষেণ করতে সেখানে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সমন্বয়ে একটি পর্যক্ষেণ টিম এলাকাটি পরিদর্শন করেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও সেখানে পাঠিয়েছে প্রশাসন।
এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকটি টহল দল সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। বুধবার হেলিকপ্টারে করে সদস্যদের মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে জানান, সীমান্ত এলাকায় শরণার্থীদের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর টিম পাঠানো হয়েছে। শরণার্থীদের মনোভাব জানার পর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গত শনিবার মিয়ানমারের চীন রাজ্য থেকে ১২৪ জন বৌদ্ধ শরণার্থী পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রী প্রানসা ইউনিয়নের চাইক্ষাং সীমান্তের শূন্যরেখায় (নোম্যান্স ল্যান্ড) অবস্থান নেয়ার পর তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। বুধবার আরো ৪০ পরিবার সেখানে জড় হয়। আরো বেশ কিছু শরণার্থী সীমান্ত পথে আসছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গত ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন ও চীন রাজ্যে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সাথে সেনাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের পর আতংকে খুমি, খেয়াং, বম ও রাখাইন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন সীমান্ত পথে বান্দরবান দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।
এ ঘটনায় বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি।
গত ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন ও চীন রাজ্যে শক্তিশালী বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ আরাকান আর্মি দেশটির বিজিপি ও সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা করে। এরপর থেকে সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।
রাখাইনের বুথিডং রাথিডং এলাকার স্থানীয়রা নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে পারলেও চীন রাজ্যের প্লাতোয়া জেলার লোকজন সীমান্ত কাছে হওয়ায় বাংলাদেশের বান্দরবান সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগষ্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনী মুসলিম রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেকে বাচতে প্রায় ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়।