বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) মহাসচিব পদে পরিবর্তন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা। মহাসচিব পরিবর্তন ইস্যুতে চলছে তোলপাড়ও। সরকার বিরোধী আন্দোলন জোরদার না করার ব্যর্থতাকে সামনে এনে বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সরানো হচ্ছে। ফখরুলকে সরিয়ে নতুন মহাসচিব পদে অন্য কাউকে বসানোর চিন্তা-ভাবনাও করা হচ্ছে।
এরইমধ্যে তার ইঙ্গিত দিয়ে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় দলের পুনর্গঠন ও পরিবর্তনের কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।
এদিকে, বিএনপির সিনিয়র একটি গ্রুপ আর কোনভাবেই মহাসচিব পদে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দেখতে চাচ্ছেন না। তাদের মনোভাব এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পৌছেঁ দেয়া হয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ এবং জাতীয় ঐক্যফন্টের সাথে রাজনৈতিক মিত্রতা এবং সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো জনমত গড়ে তুলতে না পারার কারণে অধিকাংশ নেতা-কর্মীরা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপর বিরক্ত। বিশেষকরে কারাবন্দী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার বিষয়ে সঠিক দিক-নির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রেও মহাসচিবের ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়। সম্প্রতি দলের যৌথসভায় বিষয়গুলো নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। ঐ আলোচনায় দলের সিনিয়র নেতারা নিজেদের ব্যর্থতার দায়ে সরে দাঁড়ানোর ও ঘোষণা দেন। বিশেষকরে স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এবং ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন।
এদিকে, দলের মহাসচিব পরিবর্তন নিয়ে একটি মহল যুক্তরাজ্যে যোগাযোগ শুরু করেছেন। ঐ মহলটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সরিয়ে ক্লিন ইমেজের অধিকারী এবং খালেদা-তারেকের আস্থাভাজন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে মহাসচিব পদে বসানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন। এ প্রক্রিয়ায় দলের সিনিয়র নেতাদেরও সমর্থন রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে দলের একটি অংশ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সামাল দেয়ার জন্য মির্জা আব্বাসকেও মহাসচিব পদে বসানোর পাঁয়তারা করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, বর্তমান মহাসচিবকে পদে রেখে কোনভাবেই সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাছাড়া দলের চেয়ারপারসন মুক্তিতেও কোন অগ্রগতি হবে বলে মনে হয় না। তার মতে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভদ্র মানুষ, স্বচ্ছ রাজনীতি করেন। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় এধরণের লোক দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করা সম্ভব না। তিনি অভিমত দেন, বিএনপির খোল-নলচে পাল্টে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে বিএনপিকে।