একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিভিন্ন আন্দোলনের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত সরকারবিরোধী কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা গেছে, বিভিন্ন বন্ধুরাষ্ট্র এবং দেশীয় সহযোগীদের চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত করণীয় নির্ধারণ করতে ১৫ জানুয়ারি বৈঠকে বসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। কিন্তু সে বৈঠকের ফলাফলও শূন্য, কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি তারা। এমন প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা ওই বৈঠককে অলস আড্ডা বলে অভিহিত করছেন।
বৈঠক সূত্রের খবরে জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বেশকিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত এসেছে। সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম বিষয়গুলো হলো- উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ব্যাপারে একমত হওয়া, নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, সপ্তম জাতীয় সম্মেলন, বিষয়ভিত্তিক সমালোচনা কমিটি গঠনের প্রস্তাব এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠকে বসলেও ফল খুব বেশি লাভজনক হবে না। বৈঠককে এক ধরনের শীতকালীন চা চক্রের আড্ডা হিসেবেই গণ্য করছেন তারা। বিগত দশ বছরে নেত্রীসহ আন্দোলন করতে পারেনি বিএনপি। সুতরাং নেতৃত্বহীন বিএনপি যে শুধু সমালোচনা, নিয়মিত অভিযোগ-নালিশ এবং দ্বারে দ্বারে ঘুরেই আগামীতেও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে কালক্ষেপণ করবে, এতে কোন সন্দেহ নেই বলেও মনে করছেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠককে অলস রাজনৈতিক কর্মীদের আড্ডা দাবি করে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, বলতে দ্বিধা নেই বিএনপির স্থায়ী কমিটি বৃদ্ধ এবং বয়স্কদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। যে কমিটির মাধ্যমে সারাদেশে রাজনৈতিকভাবে তৎপর হওয়ার কথা ছিলো বিএনপির, সেই কমিটির সদস্যরা মাঝে মাঝে গুলশান এবং পল্টন কার্যালয়ে শীতকালীন খোশগল্পে মেতে উঠে নিয়ম রক্ষার স্বার্থে কিছুটা সরকারের সমালোচনা করে পদ রক্ষা করে চলেন। বিষয়গুলো হাস্যকর। একটা দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যখন ইনঅ্যাকটিভ, সেখানে তৃণমূল যে পথভ্রষ্ট হবে সেটিই স্বাভাবিক। শুনেছি, একাধিক এজেন্ডা নিয়ে বৈঠক করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। দেশবাসী জানে, বিএনপির সিদ্ধান্ত শুধু আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ। রাজনীতির নামে বিএনপি শুধু নালিস-তদবিরে ব্যস্ত। একটা রাজনৈতিক দল যেসব কারণে অজনপ্রিয় এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সেসব লক্ষণ বিএনপিতে দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সত্যিই শঙ্কার।