খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহনের আগে প্রকৃতি পূজারি ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী বম সম্প্রদায়। ১৯১৮ সালে তারা খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে।
এ উপলক্ষে বান্দরবানের রুমা উপজেলা হাইস্কুল মাঠে খ্রিস্টের সুসমাচার প্রচারের শতবর্ষ পূর্তি পালন করছে সম্প্রদায়টি।
তিন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য উৎসব পালন করছে তারা। নেচে-গেয়ে আনন্দ উদ্দীপনায় উৎসব চলছে রুমা উপজেলায়। এতে ভারত আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথিরা যোগ দিয়েছেন। এছাড়া পার্বত্য তিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বম সম্প্রদায়ের নারী পুরুষও উৎসবে অংশ নিচ্ছেন।
শুধু বম সম্প্রদায়ই নয়, অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজনও উৎসবে যোগ দিয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রুমা হাইস্কুল মাঠে ‘বম রাম গসপেল সেন্টেনারী’ শীর্ষক উৎসবের উদ্বোধন করেন বম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা রেভারেন্ড কামখুপ বম। শনিবার সকালে জাতীয় সঙ্গীত ও সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। পরে বম সম্প্রদায়ের তরুণ তরুণীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
উৎসবে বম সম্প্রদায়ের হারিয়ে যাওয়া শিং নৃত্য, বাঁশ নৃত্যসহ একশ শিল্পীর অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী নাচ ও গান পরিবেশন করা হয়। উৎসবে যোগ দেন রুমা জোনের সেনা কর্মকর্তা মেজর মাসুদ রায়হান, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ডেভিড বম, জুয়েল বম, ভারতের মিজোরাম রাজ্যের এলআইকেবিকে এর খ্রিস্ট ধর্মীয় নেতা রেভারেন্ড সি সাংজোয়ালা, বান্দরবানের বম সম্প্রদায়ের নেতা রেভারেন্ড লাল রুয়াল লুং, রেভারেন্ড লাল রেম সাং, রেভারেন্ড খল্লিয়ান বম, রেভারেন্ড কে রেমা, রেভারেন্ড ভান্নুয়াম বম, পাস্তুর জির কুং সাহু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি রেভারেন্ড পেকলিয়ান বম পরিবর্তন ডটকমকে জানান, শতবর্ষ পূর্তি উৎসবের মাধ্যমে বম সম্প্রদায়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি বিশ্বের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। নতুন প্রজন্মরাও অনেক কিছু শিখছে এর মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার ভাইরেলহ গ্রামে যিশু খ্রিস্টের সুসমাচার পৌছে দেন ধর্মীয় নেতা রেভারেন্ড এডউইন রোলেন্ডস। বর্তমানে পাড়াটির অস্তিত্ব না থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের বম সম্প্রদায় প্রকৃতি পূজা ছেড়ে খ্রিস্ট ধর্ম পালন শুরু করে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বম সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় ২০ হাজার।