নোয়াখালীর সেনবাগ দক্ষিণ বাজারে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানের সমর্থকরা। এ ঘটনায় সেনবাগ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। গত ১৬ ডিসেম্বর সকাল পৌনে নয়টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আজাদসহ হামলায় আহত বাকি ছয়জনের মধ্যে তিনজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন পাটোয়ারী, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি শিহাব উদ্দিন ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ।
গুরুতর আহত আবুল কালাম আজাদ ও শিহাব উদ্দিন নোয়াখালী শহরের প্রাইম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন পাটোয়ারীর ভাষ্য, উপজেলা প্রশাসন থেকে সকাল সাড়ে নয়টায় বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেওয়ার সময়সূচি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী, উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদসহ নেতাকর্মীরা সকাল সাড়ে আটটার পর দলীয় কার্যালয়ে যান। সকাল পৌনে নয়টার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জনের একদল অতর্কিত কার্যালয়ে হামলা করে। যারা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী মফিজের সমর্থক।
মুক্তার হোসেন পাটোয়ারী বলেন, হামলাকারীরা জয়নাল আবেদীন ফারুকের পক্ষের নেতাকর্মীদের দিকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে তারা কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করার পর কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে নেতাদের পিটিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে তারা কার্যালয়ের ভেতর থেকে আসবাবপত্র ও নির্বাচনী পোস্টার রাস্তায় এনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির বিদ্রোহী নেতা কাজী মফিজের কর্মীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমাদের স্থানীয় একাধিক নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন। আমরা তাদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপি নেতা কাজী মফিজ জানান তিনি এ সম্পর্কে কিছু জানেন না। তবে জয়নুল আবদীন ফারুক এমন নাটক সাজিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নোয়াখালী-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোরশেদ আলম বলেন, বিএনপির অন্তর্কোন্দলেই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। আসল ঘটনা হচ্ছে- কাজী মফিজ বিএনপি প্রার্থী জয়নুল আবদীন ফারুককে মেনে নিতে পারছেন না। তাই এই হামলার ঘটনা একান্ত বিএনপির দলীয় কোন্দল বলেই আমরা নিশ্চিত।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, বিএনপি’র জয়নাল আবদীন ফারুক ও কাজী মফিজ গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি শান্ত। কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির বিদ্রোহী নেতা কাজী মফিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।