দেশে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীরা ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায়। সকল প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ রেখে নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যেই সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনো নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার না করার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপি দাবি করে আসছিলো তাদের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে অসংখ্য অভিযোগ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই হাজির হতে থাকেন তারা।
যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বস্ত করা হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না, ভবিষ্যতেও হবে না। এ সংক্রান্ত দিক-নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া হয় দেশের প্রতিটি থানায়। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বারবার নিশ্চয়তা দিয়ে জানান, অপরাধী ব্যতীত কাউকে গ্রেফতার করার নির্দেশ প্রশাসনকে দেয়া হয়নি। তবে থেমে থাকেনি বিএনপি। সরকারকে বিতর্কিত করতে একের পর এক মিথ্যা অপপ্রচার চলতেই থাকে।
তবে সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢালাওভাবে নেতাকর্মী গ্রেফতারের অভিযোগ আনা থেকে সরে এসেছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় সম্প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ী, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সম্পৃক্ত দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করলে আমাদের আপত্তি নেই। তিনি আরও স্বীকার করে নেন যে, বিএনপিতে এমন কিছু নেতাকর্মী রয়েছেন যারা মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত। এদের কারণে বিভিন্ন সময় দলের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়েছে। তাই বিএনপির যেসব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের আইন শৃঙ্খলাবাহিনী গ্রেফতার করলে দলের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি আরো যোগ করে বলেন অপরাধী শুধু বিএনপি না, যে দলেরই হোক না কেন তাকে আইনের আওয়তায় নিয়ে আসা উচিত। তবে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন বিনা অভিযোগে কিংবা অপরাধে দলের কোনো নেতাকর্মীকে শুধু মাত্র রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য যেন গ্রেফতার করা না হয়।
প্রসঙ্গত দেশ থেকে মাদক নির্মূলের জন্য কয়েক মাস ধরে চলা বিশেষ অভিযান সারা দেশে এখনো চলমান রয়েছে। জিরো টলারেন্স নিয়ে দেশ থেকে মাদক নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে যে, অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে নিয়ে আসতে তারা কখনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো পরিচয় বিবেচনায় নেন না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা আশা করছেন, বিএনপি মহাসচিবের এ ইতিবাচক বক্তব্যের প্রমাণ তিনি তার কাজের মাধ্যমে দেবেন। আর কখনোই কোন দাগী অপরাধীর পক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রকার বক্তব্য আসবে না।