নিউজ ডেস্কঃ- ড. শাহদীন মালিক, সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল’- এর পরিচালক। দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন রাখঢাকহীনভাবে। আইনের মানুষ হলেও মাঝে মাঝে তিনি আইনের বিপক্ষে মতামত দেন কেবলমাত্র স্বার্থের কারণে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরামহীন প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। অথচ এই এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে যে ক’জন ব্যক্তি গোপনে কাজ করছেন তাদের মধ্যে ড. শাহদীন মালিক অন্যতম। মুখে উন্নয়ন, গণতন্ত্র, আইনের কথা বললেও তার কার্যক্রম আইনের পরিপন্থী। ড. শাহদীন মালিক মনে-প্রাণে উন্নয়ন বিরোধী পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী বলে খ্যাত। বিগত বিশ বছর ধরে তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তিনি মনে-প্রাণে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক বলেও আইনজীবী মহলে গুঞ্জন রয়েছে।
বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে জানা যায়, ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্বে শাহদীন মালিক একটি এনজিও’র নামে তথাকথিত একটি সার্ভে পরিচালনা করেন। সেই সার্ভের রিপোর্টে শাহদীন মালিক দেখিয়েছিলেন যে, বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে সারা দেশের দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেতে সমর্থ হবে। সেই রিপোর্টটি তিনি সারা দেশে প্রচার করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. শাহদীন মালিক এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। যুক্তরাজ্যে পিএইচডি করার নামে অননুমোদিত উপায়ে বহুবছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরবর্তীতে দেশে ফিরে ড. কামাল হোসেনের প্রতিষ্ঠিত এনজিও ‘ব্লাস্ট’- এ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। মুখে সত্যের ফুলঝুরি ছড়ালেও ড. শাহদীন মালিক একজন প্রতারকও। ১৯৯৬ সালে শাহদীন মালিক চাকরিচ্যুতের বিষয়টি গোপন রেখে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে চাকরির জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধের কারণে ড. শাহদীন মালিকের নিয়োগ সুপারিশ বাতিল করে।
জানা যায়, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর ড. শাহদীন মালিক তৎকালীন সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নানাবিধ অনৈতিক সুবিধা আদায় করে নেন। তিনি মূলত আওয়ামী লীগ বিরোধী মনোভাবের কারণে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১/১১ সরকারের সময় হঠাৎ করে সংবিধান বিশেষজ্ঞের অবতারে আবির্ভূত হন। অথচ তিনি কখনই সংবিধান নিয়ে কাজ করেননি। তৎকালীন সরকারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে শাহদীন মালিক ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন আইনজীবী ভাগাভাগি করে দেশের সবকটি কমিশনের আইনজীবী নিযুক্ত করেন। সেই সময়ে শাহদীন মালিককে নির্বাচন কমিশন ও দুদকের আইনজীবী নিযুক্ত করা হয়। আবার তারই সুপারিশে দু’জন ঘনিষ্ঠ আইনজীবীকে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। তাদের একজন হলেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামির আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এবং ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। ২০০৯-২০১২ সালে শাহদীন মালিক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে যে কয়টি মামলা করেছিলেন সেগুলোর পিটিশনার ছিলেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।
সূত্রের খবরে জানা যায়, ড. কামাল হোসেন ও শাহদীন মালিক বিগত ৮-৯ বছর যাবৎ বিলিয়া (বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ল’ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স) দখল করে আছেন। সেখানে সরকারের দু’টি মন্ত্রণালয়ের ( আইন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) অর্থায়নে পরিচালিত বিলিয়ায় সরকারবিরোধী অনেক পরিকল্পনামূলক গোপন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ড. কামাল হোসেন এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন। আর প্রেসিডেন্ট ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান শেলী। বিলিয়ার চেয়ারম্যান পদটি নির্বাহী ক্ষমতাসম্পন্ন পদ। বিচারপতি হাবিবুর রহমান শেলীর মৃত্যুর পর ড. কামাল হোসেন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেও প্রায় সাড়ে তিন বছর চেয়ারম্যানের পদটি আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন। মনোনীত চেয়ারম্যান যাতে দায়িত্ব নিতে না পারেন সেই জন্য প্রায় সাড়ে তিন বছর বিলিয়ার সভা ডাকা হয়নি। এছাড়া শাহদীন মালিকের কারণে গত কয়েক বছর ধরে বিলিয়ায় আয়-ব্যয়ের কোন অডিট হচ্ছে না। এই প্রতিষ্ঠানে অনেক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, এই অনিয়মে ওতপ্রোতভাবে জড়িত শাহদীন মালিক নিজেই।