তারেক নয়, খালেদা মনোনীত প্রার্থীই চূড়ান্ত


প্রকাশের সময় :৯ অক্টোবর, ২০১৮ ৪:০৯ : অপরাহ্ণ 544 Views

বান্দরবান অফিসঃ-তারেক জিয়াকে আর রাজনীতিতে চাইছেন না বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া- তার এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। দল এবং দলের বাইরে তারেক জিয়াকে নিয়ে সীমাহীন অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবশেষে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন খালেদা জিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারেকের পছন্দের কাউকে প্রার্থী করা হচ্ছে না।

২০০১ সালে পাকিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। শুরু হয় তারেক তাণ্ডব। লাগামছাড়া দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ছাড়াও দলীয় বয়োজ্যেষ্ঠদের অপমান করার মত বেশকিছু অভিযোগে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন কর্নেল অলি আহমেদ (অব.), মেজর আব্দুল মান্নান খান (অব.), বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এছাড়াও বেশকিছু নেতা দলের ভেতর কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এরা হলেন: মেজর আখতারুজ্জামান (অব.), তরিকুল ইসলাম, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, আবদুল্লাহ আল নোমানের মত ঝানু রাজনীতিবীদরা। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে বোমা হামলা, সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা, অতিরিক্ত জামায়াত নির্ভরতার মত অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও দলীয় নেতা-কর্মীরা তারেকের উপর বিরক্ত।

কারাবরণের পরও সন্তান হয়ে মায়ের পাশে না দাড়িয়ে লন্ডনে অবৈধ নারীসঙ্গ, মদ খাওয়া এবং জুয়া খেলায় তারেকের প্রতি হতাশ হয়ে পড়েন মা খালেদা। সন্তান হয়ে মায়ের প্রতি দায়িত্বে অবহেলার ঘটনায় আহত খালেদা জিয়া ঘনিষ্ঠ জনদের কাছে এই দু:খ গোপন করেননি।

গত বছর জুলাই মাসে লন্ডনে যান বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। যাওয়ার চার মাস আগে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তারেক জিয়ার অজ্ঞাতসারেই তিন মাস ধরে দলীয় প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের এই সাক্ষা‌ৎকার পর্ব চলতে থাকে। জুন মাসের ভেতর ৩০০ আসনে প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা তৈরী করা হয়। ২০ দলীয় জোটের সাথে এবং জোট ছাড়া মোট দুই ধরণের আসন বিন্যাস তালিকা খালেদা জিয়া নিজের তত্ত্বাবধায়নে তৈরী করেন। অনুমতি ছাড়া মনোনয়ন প্রার্থী বাছাইয়ের এই কার্যক্রম তারেক জিয়া মেনে নিতে পারেননি। সাথে সাথে খালেদা জিয়ার সাথে যোগাযোগ করে এই বাছাই প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলে মায়ের সাথে। নিজেকে চেয়ারম্যান দাবি করে এই তালিকায় সাক্ষর করবেন না বলেও জানান।

খালেদা জিয়ার অজ্ঞাতে তার বাসভবন এবং কার্যালয়ে তারেক জিয়া গোপন শব্দ ও দৃশ্য ধারণ যন্ত্র স্থাপন করেন। চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী শিমুল বিশ্বাসকে নিজের গোয়েন্দা হিসেবে নিয়োগ করেন। এসব ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই খালেদা জিয়া বিরক্ত হন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে ফেব্রুয়ারী মাসে খালেদা জিয়ার জেল হওয়ার পর গত শনিবার খালেদা জিয়াকে চিকি‌ৎসার কারণে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বি এস এম এম ইউতে স্থানান্তর করা হয়।

জাতীয় নির্বাচন এবং নেতৃত্ব নিয়ে দ্বিধান্বিত দলীয় হাইকমান্ড সেখানে খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষা‌ৎ করেন। বিএনপির এই চেয়ারপার্সন গত বছর জুলাই মাসে তার মনোনীত প্রার্থীদেরকেই চূড়ান্ত বলে আবারো ঘোষণা করেন এবং তাদেরকে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে আদেশ দেন। সেই সাথে তারেক জিয়ার ব্যাপারে তাদের সাবধান থাকতে বলেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!