বান্দরবান অফিসঃ-আগামী ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা। চলতি বছরে পাবলিক ও মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু এবং সুশৃঙ্খল করতে হাতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। বিগত বছরে সফল প্রশ্নফাঁস রোধের ধারাবহিকতায় তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। বিগত সময়ের ন্যায় এবারও নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার ও কঠোর নজরদারিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে তারা। নেয়া হয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয় কর্তৃক সকল ব্যবস্থা। বিশেষত, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সক্রিয় রয়েছে গোয়েন্দা জাল।
এর আগে গত বছরে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের বেশকিছু সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে বের হয়ে আসে প্রশ্নপত্র ফাঁসের নানা তথ্য। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে সে মোতাবেকই কাজ করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ বিভাগ, সিআইডি’র সাইবার পুলিশ ব্যুরো এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে প্রশ্নপত্র ফাঁস। শিক্ষার্থী ও সচেতন অভিভাবকদের মধ্যে বেশ স্বস্তিও আসে। সে মোতাবেক এবারও যাতে কৌশল পাল্টিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের হোতারা সক্রিয় হয়ে উঠতে না পারে সে জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সম্ভাব্য প্রশ্নপত্র ফাঁস মাধ্যমের সকল স্তরে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা।
সূত্র বলছে, এরইমধ্যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে গ্রুপ তৈরির কাজ করছে অনেকেই। আশ্বাস দিচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, এসএসসি ও এইচএসসি’র ফাইনাল পরীক্ষা এমনকি বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরসহ সংগ্রহ করতে পারবে। এক্ষেত্রে গুনতে হবে বড় অংকের টাকা। আর সেগুলো সবই গোয়েন্দাদের নজরে থাকছে। বেশকিছু চক্রের সদস্যদের ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শতাধিক অ্যাকাউন্ট সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে তাদের গতিবিধি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা অনলাইন ও অফলাইনে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের প্রত্যেকটা পদক্ষেপ মনিটরিং করছি। ফেসবুক, ইমু, ভাইভার, হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্যান্য ইঞ্জিনগুলো গোপন এজেন্টের মাধ্যমে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ ধরনের কাজ যারা করে তারা সবসময় নিত্য-নতুন কৌশল অবলম্বন করে। আমরা আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ৫ই অক্টোবর দেশব্যাপী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে একটি চক্র ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছে। এ ধরণের পোস্ট দিয়ে প্রশ্নপত্র সরবরাহের খবর ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। চক্রের সদস্যরা বেশকিছু গ্রুপ তৈরি করেছে। একেকটি গ্রুপে ৫০০/৬০০ করে সদস্য রয়েছে। গ্রুপ এডমিনরা তাদের নিজেদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলের শিক্ষার্থী দাবি করছেন। যদিও বাস্তবে এ রকম কোনো সত্যতা পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময় এ রকম কয়েকটি চক্র বেশ তৎপর হয়ে উঠেছিলো।
সিআইডি’র সাইবার পুলিশ ব্যুরো ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে গতবছর থেকে আমরা বেশ গুরুত্ব দিয়েই কাজ করছি। এখন পর্যন্ত আমরা প্রায় ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি। এদের মধ্যে অনেকে আছে যারা ডিভাইস আমদানি করে। আমরা গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এ বছর আগে থেকেই কাজ শুরু করেছি। সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কয়েকদিন আগে ৫ জনকে গ্রেপ্তারও করেছি।