টিউলিপ সিদ্দিকীর এ বক্তব্য ছিলো সাদামাটা ও অতি-স্বাভাবিক। যাতে বিন্দুমাত্র অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কারণ তিনি একটি দলের রাজনীতি করেন, যে দলের একটি আলাদা বিদেশ নীতি আছে। আর সেই নীতির বাইরে কথা সেই দলের কেউই বলতে পারেন না। তবে উক্ত কথায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান করে কিছু বলার প্রমাণ মেলেনি।
কিন্তু পাকিস্তানি গণমাধ্যম ‘পাকিস্তান ডিফেন্স’ সংবাদটি বিকৃত করে প্রচার করে। তারা তাদের পত্রিকায় লিখেছে ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমকে ছেড়ে দিতে টিউলিপ সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক বলেন, সংবাদ কোনো বক্তব্যের বিকৃতিকে সমর্থন করে না। টিউলিপ সিদ্দিকীর কথাকে বিকৃত করে একটি বিশেষ মহল নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চেষ্টা করছে। সাংবাদিক টিউলিপ সিদ্দিকীর কথার আগে-পিছে নিজের মন্তব্য জুড়ে দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে, ফলে এটিকে আর সংবাদ বলা চলে না। এটিকে বলা হয় তথ্য সন্ত্রাস। সরকারের তরফ থেকে উচিত হবে তথ্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
টিউলিপ সিদ্দিকীর কথার ধরণকে ভিন্নরূপে অনুবাদ করে নেয়ার আসল উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর জার্নালিস্ট (আইসিএফজে)-এর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের রাজনীতির অবস্থা পরিমাপ করলে দেখা যায়, কিছু গণমাধ্যম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে এর আগে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়েও অসংখ্য গুজব ছড়াতে দেখা গেছে সেসব গণমাধ্যমকে। এ সকল বিষয় অতি-সত্ত্বর ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে এ দেশের মানুষকে।
পাকিস্তান ডিফেন্সের বিকৃত করা সংবাদ অনুবাদ করে বাংলাদেশের দর্শকদের সামনে পরিবেশন করে অনলাইন পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন। আর সেখান থেকেই অন্যান্য পত্রিকাগুলো যাচাই-বাছাই না করেই বানোয়াট সংবাদটি পরিবেশন করা শুরু করে। কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্রিটিশ টাইম পত্রিকা থেকে অনুবাদ না করে পাকিস্তানি একটি পত্রিকা থেকে কেনো বাংলাদেশের গণমাধ্যম সংবাদটি অনুবাদ করলো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, শুধুমাত্র তৃতীয় পক্ষের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাংলাদেশি মিডিয়াগুলো যদি বিক্রি হয়ে যায়, তবে তাদের উপর থেকে জনমনের আস্থা উঠে যাবে।