সড়ক দুর্ঘটনার নেপথ্যে


প্রকাশের সময় :২ আগস্ট, ২০১৮ ৩:২৮ : অপরাহ্ণ 609 Views

সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-সাম্প্রতিক সময়ে বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনার মূলে রয়েছে যানবাহন গুলোর বেপরোয়া গতি। মহাসড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও চালকেরা ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে যাত্রীবাহী বাস চালাচ্ছেন। মোটরযান আইনে গতিসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এই আইন মানলে যাত্রীবাহী বাসগুলো শহর ও লোকালয়ে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। অধিক মুনাফা লাভের আশায় আইন লঙ্গন করে বেপরোয়া গতিতে যাত্রীবাহী বাস চালাচ্ছেন চালকরা। ফলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে।

দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। পরিবেশ-পরিস্থিতিসহ অন্য কারণে দুর্ঘটনার পরিমাণ ১০ শতাংশ।

এই তথ্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই)। দুর্ঘটনার কারণ-সংক্রান্ত পুলিশের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এআরআই এই চিত্র পেয়েছে। ১৯৯৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার বিশ্লেষণ রয়েছে এআরআইয়ের। প্রতিষ্ঠানটি নিজেও বড় দুর্ঘটনাগুলো তদন্ত করে থাকে। তাদের গবেষণা বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার ৪৩ শতাংশই ঘটছে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে।

বেপরোয়া গতিই সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ হিসেবে মেনে নিয়ে ২০১৫ সালের অক্টোবরে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক বৈঠকে গতি নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন এই কাউন্সিল সড়ক নিরাপত্তার সর্বোচ্চ ফোরাম। এতে মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধি ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি রয়েছেন। কাউন্সিল মহাসড়কে বাসের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু তা আর বাস্তবায়ন করা যায়নি।

বিআরটিএ সারা দেশে ১০২টি চালক প্রশিক্ষণ স্কুলের নিবন্ধন দিয়েছে। লাইসেন্স পেতে যে প্রশিক্ষণের দরকার, তা এসব স্কুল থেকে পাওয়ার কথা। তবে বিআরটিএ সূত্র বলছে, এসব স্কুলের বেশির ভাগেরই হদিস নেই। কারণ, লাইসেন্স পাওয়া যায় দালাল ধরে। এছাড়া ১৯৯০ সালের পর থেকে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার পেশাদার চালকের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে শ্রমিক ইউনিয়নের তালিকা ধরে। সঠিকভাবে তাঁদের যোগ্যতার পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি।

সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে করণীয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা বলেন, গতিনিয়ন্ত্রণে ডিজিটাল গতি পরিমাপের ব্যবস্থা থাকতে হবে। আর চালকের প্রশিক্ষণে জোর দিতে হবে। বড় ভাই, ছোট ভাইকে এবং চালক তাঁর সহকারীকে কোনোরকম নীতিমালা ছাড়াই চালক ঘোষণা করে ছেড়ে দিচ্ছেন। লাইসেন্স-ব্যবস্থা শক্ত নীতিমালার আওতায় আনতে হবে। আর সবকিছুর ওপরে আইন অমান্যের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা থাকা এবং তা কার্যকর করা জরুরি।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!