হাসিবুল হাসান শান্ত নামের ওই যুবক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, গত ১১ তারিখ সন্ধ্যায় গ্লোরিয়া জিন্সে আমি আর আমার এক বন্ধু কফি খেতে গিয়েছিলাম। লক্ষ্য করলাম, অদূরেই বসে ছিলেন বিএনপি শীর্ষ নেতা শ্রদ্ধেয় মির্জা আব্বাস এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। হঠাৎ অবাক হলাম তাদের আলোচনা শুনে। বিএনপিকে পরিপাটি মনে হলেও আজ বুঝলাম ভেতরে ভেতরে কতটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিএনপি।
শান্ত আরও লিখেছেন, মির্জা আব্বাস গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দুঃখের সুরে বলেন, দাদা এতদিন আন্দোলন-সংগ্রাম করে কী পেলাম? কপালে শুধু পুলিশের ধরপাকড় আর জেল-জুলুমই জুটলো। আন্দোলন করে, পুলিশের ডান্ডার মার খেয়ে, কাপড় ও জুতো ছিড়ে আমাদের, আর ঈদের আগে দিল্লি-ব্যাংকক-লন্ডন ট্যুর করে বেড়াচ্ছেন দুই-তিনজন নেতা। আমরা আসলে রাম বলদ। সারা জীবন গতর খেটেই যাব আর বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা দিয়ে পকেট খালি করতেই থাকব। মির্জা আব্বাসকে স্বান্তনা দিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, দুঃখ নিয়েন না দাদা। আমরা বিএনপিতে থেকে সবসময় গরিবের হয়ে কাজ করেছি। সারা জীবন দলের জন্য সময় দিয়ে কিছুই হাতে আসল না। মার খাই আমরা, জেল খাটি আমরা, পালিয়ে বেড়াই আমরা- আর বিদেশের মাটিতে দলের টাকায় লেবু-পানি খান মির্জা ফখরুলরা। গরিবের কপালে শুধু দুঃখই থাকে। এভাবে কি দলে থাকা যায়, রাজনীতি করা যায়? ভাবছি দল ছেড়ে দেব। এবার মুখ খুলবই আমি। মিটিংয়ে বিষয়টা নিয়ে কথা তুলবো। আপনি শুধু আমাকে সাপোর্ট দিয়েন।
এ বিষয়ে গয়েশ্বর রায়ের পুত্র বধু এ্যাডভোকেট নিপুন রায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, যদি এরকম কোনো আলাপ উঠেই থাকে তবে তা আমার মতে ঠিকই আছে। বিএনপিতে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের রেওয়াজ ধীরে ধীরে উঠেই যাচ্ছে। আন্দোলন-সংগ্রামে পথে থাকা নেতাদের আড়ালে যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে তাতে মনে হয় না দলে নেতাদের আর কাউকে প্রয়োজন আছে।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকের ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে মির্জা আব্বাস-গয়েশ্বর রায়ের বক্তব্যের জের ধরে একটি জরুরি সভা ডাকা হয়ে গেছে বলেও জানা যায়।
সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের একান্ত আলাপচারিতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রের স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ফেসবুক দুনিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। জানা গেছে, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে দলের কাছ থেকে কোনো মূল্যায়ন না পাওয়াকে কেন্দ্র করে গুলশানের অভিজাত কফিশপ গ্লোরিয়া জিন্সে কথোপকথনকালে দুঃখ প্রকাশ করেন ওই দুই নেতা। পরে তা নিজ উদ্যোগেই ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তুলে ধরেন হাসিবুল হাসান শান্ত নামের ওই যুবক। পরে ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।