২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বেশি গুরত্ব পেয়েছে শিক্ষা খাত। এই খাতের সর্বোচ্চ উন্নয়নের লক্ষ্যে বাজেট রাখা হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় গ্রহণের পর পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে এই খাত। প্রাথমিকে ভর্তির হার প্রায় শতভাগ, ঝরে পড়া কমেছে অনেকাংশেই। প্রাথমিকের এক কোটি ৩০ লাখ শিশু উপবৃত্তি পাচ্ছে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরেও অর্জিত হয়েছে জেন্ডার সমতা। কারিগরি শিক্ষায় বর্তমানে শিক্ষার্থীর হার ১৪ শতাংশ। প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় চার কোটি শিশু বছরের প্রথম দিনে বিনা মূল্যে বই পায়। সাক্ষরতার হার ১১ বছরে বেড়ে হয়েছে ৭৩ শতাংশ। শিক্ষা অবকাঠামোতেও বিপ্লব সাধিত হয়েছে। এখন আগের মতো ভাঙা স্কুল-কলেজ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে মেয়েদের অংশগ্রহণের হার ৫১ শতাংশ আর ছেলেদের ৪৯ শতাংশ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অংশগ্রহণ মেয়েদের ৫৩ শতাংশ ও ছেলেদের ৪৭ শতাংশ। আগামী ছয়-সাত বছরের মধ্যেই উচ্চশিক্ষায়ও এ ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে সমতা আসবে। শিক্ষা খাতে বিপ্লবের কারণেই এমডিজির লক্ষ্য পূরণে সরকারকে বেগ পেতে হয়নি। ২০০৯ সালে দেশের ৯ শতাংশ শিশু বিদ্যালয়ে যেত না। তাদের মধ্যে আবার ৪৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা শেষ করার আগেই ঝরে পড়ত। বর্তমানে প্রায় শতভাগ শিশুকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, বিনা মূল্যের বই, উপবৃত্তি, স্কুল ফিডিংসহ সরকারের নানা পদক্ষেপের সুফল মিলছে এখন। বিশেষ করে বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে যাওয়ায় শিক্ষার প্রতি সবার আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষ করে বেড়েছে মেয়েদের আগ্রহ। এ কারণে কমেছে বাল্যবিবাহ। কমছে ঝরে পড়াও। শিক্ষা খাতে এত উন্নতির কারণেই সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
গত সাড়ে ১১ বছরে সরকারের অন্যতম অর্জন সব শিশুর হাতে বছরের প্রথম দিনেই বিনা মূল্যের বই তুলে দেওয়া। প্রতি বছর চার কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ৩৬ কোটি বই পাচ্ছে বিনা মূল্যে। তবে এখন চ্যালেঞ্জ এসডিজি অর্জন। এ লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে সব শিশুকে প্রাক-শৈশব উন্নয়ন ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাকে মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করতে হবে। অধিকতর শিখনের জন্য শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা অসমাপ্ত রাখা শিশুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে হবে।
জানা যায়, শিক্ষা খাতের নানা উন্নয়নে নিবিড়ভাবে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে মানোন্নয়নের নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এই ব্যাপারে একাধিক শিক্ষা গবেষক জানান, গত ১০ বছরে শিক্ষা ক্ষেত্রে সংখ্যাগত অর্জনটা বেশি। আমাদের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে, জেন্ডার সমতা নিশ্চিত হয়েছে। একই সঙ্গে ভৌত সুবিধাও বেড়েছে। বিনামূল্যে বই দেওয়া, একযোগে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা সরকারের বড় অর্জন। তবে গুণগত মান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের পেছনে। মানসম্মত শিক্ষার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা দরকার।’
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.