চলমান মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষাকে সুষ্ঠু ও সু-শৃঙ্খল করতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। যাতে কোনোভাবেই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কঠোর পদক্ষেপে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটেনি। জানা গেছে, এই সফলতা ধরে রাখতে দেশের প্রতিটি পরীক্ষাতেই প্রশ্ন ফাঁসের মতো অপতৎপরতা প্রতিহত করতে মাঠপর্যায়ে কড়া নজরদারি অব্যাহত রাখা হবে। আগামী এপ্রিলে আসন্ন উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষাকে ঘিরেও তৎপর রয়েছে সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ে কাজ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এবারের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয়-সাব কমিটি ও শিক্ষাবোর্ডগুলোর নতুন গৃহীত পদক্ষেপের আওতায় প্রশ্নপত্র প্যাকেজিংয়ে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের ব্যবহারসহ একাধিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা চালু হয়েছে। যাতে প্রশ্ন ফাঁসের মতো কোন ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পাবে না দুষ্কৃতিকারীরা।
শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্নপত্র প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে এতদিন কাগজের প্যাকেটই ব্যবহৃত হয়ে আসতো। ভিতরে কাপড় মোড়ানো আর উপরে বাদামি রংয়ের কাগজের প্যাকেট। বিজি প্রেস থেকে যা সিলগালা করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ট্রেজারি এবং ট্রেজারি থেকে পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে পাঠানো হতো। নতুন পদক্ষেপে কাগজের প্যাকেটটিই আর থাকছে না। এর স্থলে অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলেই প্যাকেজিং হচ্ছে। প্রশ্নপত্র ফয়েলে ঢুকিয়ে সেটি তাপ দিয়ে সিলগালা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ফয়েলটি কাটা ছাড়া প্রশ্ন বের করা যাবে না। নতুন এ পদক্ষেপের ফলে প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা আরো জোরদার হয়েছে। এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ এবারের এসএসসি পরীক্ষা।
এদিকে প্রশ্ন ফাঁস রোধে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সারাদেশ থেকে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের প্রায় দেড় শতাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি বেশকিছু নিয়মে পরিবর্তন এনেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। নেয়া হয়েছে কঠোরতর পদক্ষেপ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ডিজিটাল মাধ্যম নিয়ন্ত্রক সংস্থার তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। মোট কথা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ যেকোন মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে নিয়ম ও নিরাপত্তার চাদরে জড়ানো হয়েছে। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও গুঞ্জন রোধে সরকারের পদক্ষেপগুলো প্রশংসা কুড়াচ্ছে। প্রশ্নপত্র ডিজাইন, প্রশ্নপত্র বিতরণে ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহারসহ শিক্ষা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর নিয়মিত মনিটরিং করায় এ বিষয়ে সজাগ ভূমিকা পালন করছেন সকলে। এর ফলে এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে শতভাগ সফল হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার ও মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপগুলো কাজে আসায় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ও কলঙ্ক থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়েছে। ফলে আগামী এপ্রিলে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষা থেকে প্রতিটি বোর্ড পরীক্ষাতেই নজরদারি অব্যাহত রাখা হবে।